১৩২ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত আসামে | চ্যানেল আই অনলাইন

১৩২ বছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত আসামে | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

আসামের সিলচরে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ১ জুন, শনিবার শহরটিতে ৪১৫ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা গত ১৩২ বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ। এর আগে ১৮৯৩ সালে শিলচরে একদিনে সর্বোচ্চ ২৯০ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

আজ (২ জুন) সোমবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উচ্চমহলের সাইক্লোনিক সার্কুলেশন ও নিম্নচাপের ট্রাফ লাইনের প্রভাবে এই প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটেছে। এই আবহাওয়াজনিত অস্থিরতার বিস্তার মধ্য আসাম থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত পৌঁছেছে, যার উৎস পূর্ব উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা একটি ট্রাফ লাইন।

এর আগে ২০২২ সালে শিলচর শহর ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়, যখন বারণ নদীর বেথকূণ্ডি এলাকায় একটি বাঁধ ভেঙে পড়ে। শহরটি বাঁধ থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ায় ৯০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে চলে যায়।

সাম্প্রতিক কয়েকদিন ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে — আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ ও মিজোরাম। বিশেষ করে মিজোরামে ৩১ মে স্বাভাবিকের চেয়ে ১ হাজার ১০২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

মেঘালয়ের বিভিন্ন জেলায় ২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিশেষ করে চেরাপুঞ্জি (সোহরা) ও মৌসিনরামে এই পাঁচ দিনে যথাক্রমে ৭৯৬ মিলিমিটার ও ৭৭৪ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশন সোহরায় ৩০ মে একদিনেই ৩৭৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যা পাঁচ দিনে মোট ৯৯৩ দশমিক ৬ মিলিমিটারে গিয়ে দাঁড়ায়।

মৌসিনরাম ও পাইনুরস্লাতেও ৩০ মে একদিনে ২৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়। মেঘালয়ের অন্তত ১০টি জেলা ফ্ল্যাশ ফ্লাড ও ভূমিধসের শিকার হয়েছে। ত্রিপুরায় ফ্ল্যাশ ফ্লাডে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। অপরদিকে, মণিপুরে নদীর পানি উপচে পড়া ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে ১৯ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ৩ হাজার ৩৬৫টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বর্ষার আগমনে প্রকৃতি যেন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি যেমন নতুন ইতিহাস গড়েছে, তেমনি হাজারো মানুষের জন্য এনেছে দুর্ভোগ ও উদ্বেগ। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

Scroll to Top