চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. জয়নাল আবেদীন ওরফে সেলিম। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ৮টি ব্যাংক থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ তার। এখন সপরিবারে কানাডায় বসবাস করছেন। তার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশের কাছে কোনো তথ্য নেই। কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেলিমের বিরুদ্ধে শুধু অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করে দায় সেরেছে। তবে অর্থঋণ আদালতের মামলায় তিনি একজন ‘ফেরারি’। সূত্র জানায়, ঋণের সকল টাকা তিনি কানাডায় পাচার করেছেন।
চট্টগ্রামের পূর্ব নাসিরাবাদে যে ভবনে সেলিমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, সেখানে এখন অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড উঠেছে। সেলিমের ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, এফঅ্যান্ডএফ শিপ রিসাইক্লিং, ম্যাক শিপ বিল্ডার্স ও প্রিমিয়াম ট্রেন করপোরেশন নামের প্রতিষ্ঠানের জমি দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এখন সেলিমের কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই। সীতাকুণ্ডের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এ প্রতিবেদককে জানান, চোরের সম্পদ ডাকাতের দখলে গেছে।
পাওনা আদায়ে আটটি ব্যাংকই চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে। ঋণের টাকা শোধ না করায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, নাসিরাবাদ ও ঢাকার বনানীতে থাকা ম্যাক ইন্টারন্যাশনালের বন্ধকী সম্পত্তি নিলামে তুলেছে যমুনা ব্যাংক। অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এফঅ্যান্ডএফ শিপ রিসাইক্লিংয়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে অগ্রণী ব্যাংক। আরেক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এমকে স্টিল রি-রোলিংয়ের সম্পত্তি নিলামে তুলতে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে এবি ব্যাংক।
বাংলাদেশ শিপ ব্রেকিং ও রিসাইক্লিং অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জয়নাল আবেদীন সেলিম এবং অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের কারও তথ্য জানাতে রাজি হননি। সংগঠনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা ব্যাংকের টাকা মেরে পালিয়ে গেছে। আমি তাদের বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ওরফে সেলিম বিগত বছরগুলোতে কানাডায় নামে-বেনামে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি কানাডিয়ান পাসপোর্টও পেয়ে গেছেন। নিরাপদ দেশে, মহানন্দে, মহাসুখে সময় কাটছে তার!