শেখ হাসিনা বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রশ্ন’ নিয়ে তোলপাড়

শেখ হাসিনা বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রশ্ন’ নিয়ে তোলপাড়

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষায় একটি ভুল প্রশ্নকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। বিতর্কিত প্রশ্নে বলা হয়, ২০২৪ সালে ভারতের কোন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেন? এই প্রশ্নটি ছিল ‘বিশ্বায়নের পৃথিবীতে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি’ বিষয়ের অংশ। কিন্তু এতে গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ উঠে আসায় শুরু হয় বিতর্ক।

হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী বলেছেন, প্রশ্নটি সম্পূর্ণ ভুল এবং বিভ্রান্তিকর। তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। শেখ হাসিনা ছিলেন সরকারপ্রধান। তাছাড়া, ভারত কখনো তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়নি। এমন প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করতে পারে এবং এটি একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

তিনি আরো বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের জ্ঞান যাচাইয়ের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। এটি কি শুধুমাত্র একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল, নাকি শিক্ষার্থীদের সতর্কতা ও মেধা যাচাইয়ের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এমন প্রশ্ন করা হয়েছে— সেটি জানা গুরুত্বপূর্ণ।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সমীর কুমার দাসও বিষয়টি নিয়ে মতামত দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি সাধারণ জ্ঞানের একটি সাধারণ প্রশ্ন। তবে ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ শব্দটি প্রশ্নে উল্লেখ থাকায় আমি সন্তুষ্ট নই। কারণ এটি আমাদের কূটনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে কতটা সঙ্গতিপূর্ণ, তা বিবেচনার বিষয়।”

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজি বোর্ডের এক সদস্য জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা আলোচনা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত লিখিত কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি। তিনি বলেন, প্রতিবার পরীক্ষার জন্য তিনটি সেট প্রশ্ন তৈরি করা হয় এবং একটি চূড়ান্ত করা হয়। যদি কেউ আগেই এই ভুলটি তুলে ধরতেন, তাহলে বৈঠকে এটি নিয়ে সূক্ষ্ম আলোচনা করা যেত।

সামাজিক মাধ্যমে, ভুল তথ্যপূর্ণ প্রশ্নপত্র প্রকাশের পর শিক্ষার্থী এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অবহেলাকে দায়ী করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন এড়াতে আরো সতর্ক হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

শেখ হাসিনা লাখো জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে গেছেন। এরপর থেকে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের শত শত মামলা দায়ের হয়েছে।

Scroll to Top