বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক ছাত্রকে গুলির ঘটনার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
শনিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম এবিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় রামপুরায় কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনের ওপরে নির্বিচারে গুলি বর্ষন এবং ঘটনাস্থলের সামনে আরও দুজনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ট্র্যাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে আমরা অবগত হয়েছি যে, খুব শীঘ্রই এই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউসনের হাতে আসবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেন নামের এক তরুণকে গুলি করার অভিযোগে গ্রেপ্তার এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গত ২৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের একটি টিম দীঘিনালা থানা থেকে এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই আমির হোসেন জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন। আমিরের ভাষ্য, বাসার কাছে তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যান তিনি। এসময় পুলিশ গুলি করা শুরু করে। এসময় আমির হোসেন দৌড়ে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চারতলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে পুলিশ ভবনটির চারতলায় উঠে যায়। সেখানে আমির হোসেনকে পেয়ে পুলিশ সদস্যরা তার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে বারবার নিচে লাফ দিতে বলেন। একজন পুলিশ সদস্য তাকে ভয় দেখাতে কয়েকটি গুলিও করেন। একপর্যায়ে ভয়ে আমি হোসেন লাফ দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটির রড ধরে ঝুলে থাকেন। তখন তৃতীয় তলা থেকে একজন পুলিশ সদস্য আমির হোসেনকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি করেন। গুলিগুলো আমিরের দুই পায়ে লাগে। একপর্যায়ে পুলিশ চলে গেলে আমির হোসেন ঝাঁপ দিয়ে কোনোরকমে তৃতীয় তলায় পড়েন। তখন তার দুই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা পর একজন শিক্ষার্থী ও দুজন চিকিৎসক আমির হোসেনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।নির্মম এই ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আমির হোসেন।