১১ মাসেও সহায়তা পাননি জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ রনির মা

১১ মাসেও সহায়তা পাননি জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ রনির মা

জুমবাংলা ডেস্ক : ‎রাজধানীর মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা রিকশাচালক রনি। শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা করা দেখে রিকশা চালানো বাদ দিয়ে ১৮ জুলাই মোহাম্মদপুর এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন। সেদিন বিকালে সে শহীদ হন। এর ১১ মাস পার হলেও এখনো কোনো সহায়তাই পাননি তার মা।

১১ মাসেও সহায়তা পাননি জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ রনির মা১১ মাসেও সহায়তা পাননি জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ রনির মা

বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হওয়ার পর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে কয়েকজন এসে শহীদ রনির মা পারভীন বেগমকে এমআইএস সম্পন্ন করে নিয়ে যেতে বলা হয়। কিন্তু পারভীন বেগম অক্ষরজ্ঞানহীন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। কিভাবে এ কাজ সম্পন্ন করবেন তা জানেন না তিনি। এতদিন পার হলেও এখনো শহীদের খাতায় নাম নেই এ শহীদের। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পারভীন এখন আত্মীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। পাশাপাশি মানুষের বাসায় কাজ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই কোনো রকম জীবিকা নির্বাহ করছেন।

‎জানা যায়, ১৮ জুলাই বিকালে মোহাম্মদপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ছোড়া গুলিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে যান রনি। পরে আন্দোলনরত কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রিকশা চালিয়েই এ শহীদ তার মাকে নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শহীদ রনি। ছেলে হারিয়ে মা এখন অন্যের বাসায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়ার ১১ মাস পার হলেও শহীদের এ অসহায় মায়ের খবর নেয়নি কেউ।

পারভীন বেগম আক্ষেপ করে বলেন, আমার ছেলে জীবন দিল। কিন্তু কেউ আমাকে দেখতে এলো না। আমার ছেলে যা উপার্জন করত তা দিয়েই আমার জীবন চলে যেত। এখন তো উপার্জনক্ষম ছেলেও নেই। তাই মানুষের বাসায় আশ্রয় নিয়েছি। আমার ছেলে দেশের মানুষকে মুক্তির জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছে। কিন্তু এখন আমি অসহায়। ছাত্র প্রতিনিধি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কোনো নেতা কেউ কোনো দিন খবর নিতেই আসেনি।

‎শহীদ রনির চাচা ভোলা মিয়া আক্ষেপের সুরে বলেন, কোনো অক্ষরজ্ঞান না থাকায় সবচেয়ে বড় বিপাকে পড়েছেন তিনি। ছেলে শহীদ হওয়ার পর আশপাশের প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা মিলে দাফন করেছিলাম। এরপর আমরা মিলে হাসপাতালে দৌড়ে কোনোরকম ছেলের মৃত্যুর কাগজটা নিয়েছি। বেশ কয়েক দফায় কয়েকজনের সহযোগিতায় জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে যোগাযোগ করেছি। সেখান থেকে আমাদের এমআইএস নামক কি যেন একটি বিষয় সমাধান করে আনতে বলেছেন কয়েকজন। কিন্তু এ কাজ কিভাবে আমরা সম্পন্ন করব তা জানিই না।

‎জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর জানান, আমাদের অপারেশন টিম দ্রুত এ শহীদের মায়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সব রকম কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। আমি গত মিটিংয়ে এমন বিষয়গুলো নিয়ে উপদেষ্টা মহোদয়দের সঙ্গে আলাপ করেছি। শহীদ ও আহতদের অনেক পরিবার আছে। যারা বাটন মোবাইল ব্যবহার করেন। আবার অনেকে জানেনই না কিভাবে মোবাইল ব্যবহার করতে হয়। এমন অবস্থায় তারা কিভাবে ডকুমেন্টসগুলো আমাদের কাছে অনলাইনে পাঠাবেন। এজন্য আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সহায়তা পৌঁছানোর জন্য আমি উপদেষ্টাসহ আমাদের টিমকে অনুরোধ করেছি। সূত্র : যুগান্তর

Scroll to Top