মার্কিন বিমান হামলায় পারমাণবিক স্থাপনায় ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির পর কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধের অনুমোদন দিয়েছে ইরানের পার্লামেন্ট। এতে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে।
রোববার (২২ জুন) ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সদস্য ইসমাইল কাওসারি জানিয়েছেন, মজলিসের সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে মনে করছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে বিশ্বের জ্বালানি রপ্তানিতে চাপ সৃষ্টি করাই যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের যথাযথ জবাব হবে। এই সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।
বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল এই প্রণালী দিয়ে সরবরাহ হয়। পারস্য উপসাগরের মুখে অবস্থিত এই জলপথটি সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের মতো প্রধান তেল উৎপাদক দেশগুলোর রপ্তানির প্রধান সমুদ্রপথ। কাতার থেকে সরবরাহ হওয়া এলএনজির (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) জন্যও এই পথের বিকল্প নেই।
হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে কয়েক দিনের মধ্যে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির সরবরাহ চরমভাবে ব্যাহত হবে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে বহু আন্তর্জাতিক কর্পোরেশনের কার্যক্রম। গবেষণা বলছে, প্রথম সপ্তাহেই তেলের দাম ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন প্রেস টিভি জানায়, মার্কিন হামলার আগে থেকেই কৌশলবিদরা হরমুজ প্রণালীতে সংঘাতের আশঙ্কা করেছিলেন। পার্লামেন্টের অনুমোদন সেই শঙ্কাই বাস্তবে রূপ নিল।
ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করেছে।
বিশ্ববাজারে এরই মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম ১১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সমীকরণে সামনে আরও অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।