পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে এসেছে নতুন একটি বছর। নতুন বছরকে বরণ করতে দেশবাসীর কমতি ছিল না কোন কিছুতেই। পরিবারের সঙ্গে বা বন্ধুদের সঙ্গে নানান আয়োজনের মধ্য দিয়েই উদযাপিত হয়েছে নতুন বছর।
তবে নতুন বছরের শুরু ও ভরা মৌসুমে রাজধানীর বাজারে ভরপুর শীতকালীন সবজির আনাগোনা থাকলেও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই রয়ে গেছে এসব সবজি। ৬০ টাকার নিচে সবজি মেলা দায়। ফলে নববর্ষের শুরুতেই নিত্যপেণ্যর বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
মঙ্গলবার (২জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁও বাজার সরেজমিনে ঘুরে নতুন বছরে বাজার দরের এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে গোল বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, মরিচ ১২০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, সিম (ধরণ ভেদে) ৬০ থেকে ৮০টাকা, লাউ আকার ভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, মূখী কচু ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, চিচিংগা ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কাচকলার হালি আকার ভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, দেশি নতুন পিঁয়াজের কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া নতুন আলু ৭০ থেকে ৮০টাকা কেজি, পুরাতন আলুর কেজি ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, শশা ৬০(হাইব্রিড) ৮০(দেশি), ফুল কপি বড় ৬০ টাকা পিচ, বাঁধা কপি ৪০টাকা, পিঁয়াজের কালি ৬০টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৬০টাকা, চায়না রসুন বড় ২০০ টাকা, দেশি রশুন ২৪০ টাকা, ছোট ২২০ টাকা, আদা ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি বিক্রেতা সুমন সর্দার বার্তা২৪.কমকে বলেন, পাইকারী বাজারে এতো পরিমাণে সবজির আমদানী কিন্তু দাম কেনো কমছেনা সেটা বলতে পারছি না।
অন্য এক সবজি বিক্রেতা বলেন, আমদের পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে এনে বিক্রি করতে হয়। পাইকারি মার্কেটে সবজির দাম বেশি। আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।
এদিকে নতুন বছরের শুরুতেই নিত্যপেণ্যর বাজারে উর্ধ্বমুখী প্রভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।
ক্রেতা শামীম হেসেন বলেন, নতুন বছরের শুরু থেকেই বাজারে সবকিছুর দাম আগুন। সামনে তো দিন পরেই থাকলো। এভাবে আর কতদিন চলা যায়? বছর শেষ না হতেই বাসা ভাড়া বাড়ানোর নোটিশ, বাজারে সবকিছুর দাম বৃদ্ধি অথচ ইনকাম বাড়ছে না।
মো. মেহেদী বলেন, এখন শীতের সময় বাজারে যে পরিমাণ সবজির আমদানি সেই হিসেবে দামটা দেখেন। কোন কিছুর দাম কি কমেছে? কমেনি। যে যেভাবে পারছে সাধারণ মানুষের কাছে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। বাজারে একবার কোন কিছুর দাম বাড়লে সেই জিনিষের দাম আর কমে না। ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মিানিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে, আটাশ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, বাসমতি ৭৫ টাকা, খোলা পোলাওর চাল ১৪০টাকা, প্যাকেট পোলাওর চাল ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯৫ টাকা, লেয়ার ২৮০ টাকা, সোনালি মুরগির কেজি ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি বিক্রেতা মো. মনসুর মিয়ার কাছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, দাম কেনো বেড়েছে সেটা বলতে পারি না। যারা বড় বড় ব্যবসায়ী তারা বলতে পারে। আমরা তো তাদের কাছ থেকে কিনে এনে বিক্রি করি।
ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা দরে, সাদা ডিমের ডজন ১২০, হাসের ডিমের ডজন ২০০, দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২০০ টাকা।
ডিম বিক্রেতা মো. রাসেল শেখ এর কাছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে আমদানী প্রচুর আছে। তারপরেও দাম বেশি। বেশিরভাগ দাম বাড়ার কারণ কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা সংকট তৈরী করে দাম বাড়িয়ে দেয়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় সাইজের রুই মাছ ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ছোট সাইজের রুই ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কই মাছ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা,
পাপদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, টেংরা ছোট ৫০০ টাকা, বড় ৭০০ টাকা, চিংড়ি ছোট ৬০০ টাকা মাঝাড়ি ৭০০ টাকা কেজি, শিং ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খাসির মাংস কেজি ১১০০ টাকা, গরুর মাংসের কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।