সদ্যোজাত শিশুর প্রতি টান অনুভব করছেন না? আতঙ্কিত না হয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জানুন

সদ্যোজাত শিশুর প্রতি টান অনুভব করছেন না? আতঙ্কিত না হয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জানুন

বেঙ্গালুরু: সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে তাকে প্রথম দেখার অনুভূতিটাই আলাদা। আর তাকে স্পর্শ করে দেখার আবেগ তো স্বর্গীয়ই বলা যায়। কিন্তু এটা কি সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। একেবারেই না। সন্তানকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রতি বহু মা কিংবা বাবার সেই অনুভূতি জন্মায় না। তাহলে কি তাঁরা খারাপ মা কিংবা বাবা হয়ে গেলেন। এমনটাও একেবারেই ভুল ধারণা।

আসলে কারওর কারওর ক্ষেত্রে সেই অনুভূতি-আবেগ-বন্ধন জন্মাতে একটু সময় লেগে যায়। এমনটাই জানাচ্ছেন বেঙ্গালুরু রিচমন্ড রোডের ফর্টিস হাসপাতালের নিওনেটোলজি এবং পেডিয়াট্রিক্সের কনসালট্যান্ট ডা. শালিনী চিকু। তাঁর বক্তব্য, সন্তানের সঙ্গে সেই ভালবাসার বন্ধন গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। যা সারা জীবনের জন্য স্থায়ী হবে। আসলে ইংরাজিতে বলা হয়, এই বন্ডিংয়ের মূলমন্ত্র হল ৭টা B। সেগুলি কী কী, তা দেখে নেওয়া যাক।

বার্থ বন্ডিং বা জন্মের সময় থেকে বন্ডিং:

সন্তান জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গে মায়ের সঙ্গে তার ত্বকের স্পর্শ সংক্রান্ত যে ধারণা, সেটা একেবারেই ভুয়ো নয়। এতে সদ্যোজাতের হার্ট রেট এবং দেহের উষ্ণতা স্থিতিশীল হয়। এর বৈজ্ঞানিক প্রমাণও মিলেছে। এর পাশাপাশি দ্রুত স্তন্যপান চালু করে দেওয়াও বন্ধন গড়ে তুলতে পারে। তাই সন্তান জন্মানোর পর মা এবং শিশু দুজনেই সুস্থ থাকলে মায়ের উচিত চিকিৎসকের থেকে সন্তানকে স্পর্শের অনুমতি চেয়ে নেওয়া। তবে প্রিম্যাচিওর বেবি কিংবা কম ওজনবিশিষ্ট নবজাতকদের সঙ্গেও এটা অভ্যাস করা উচিত।

সদ্যোজাত শিশুর প্রতি টান অনুভব করছেন না? আতঙ্কিত না হয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ জানুন ডা. শালিনী চিকু

আরও পড়ুন: কৌশিকী অমাবস্যায় জনপ্লাবন তারাপীঠে, অথচ ফাঁকা সব হোটেল! জানা গেল আশ্চর্য এক কারণ

ব্রেস্টফিডিং বা স্তন্যপান:

এটা বিকল্প নয়, বরং দায়িত্ব। নর্ম্যাল ডেলিভারির ৩০ মিনিটের মধ্যে অর্থাৎ যত দ্রুত সম্ভব সন্তানকে স্তন্যপান করানো শুরু করে দিতে হবে। সদ্যোজাত সন্তানের জন্য অন্তত ৬ মাস শুধুমাত্র স্তন্যদুগ্ধই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেই জায়গায় জলও কিন্তু অতটা জরুরি নয়। স্তন্যপান করানো তো শুধু সন্তানের পুষ্টির জন্য নয়, সেই সঙ্গে সে মায়ের হৃদস্পন্দনও শুনতে পায়। এমনকী মায়ের গন্ধ অনুভব করে এবং মা-কে স্পর্শের অনুভূতিও পায় নবজাতক।

বেবিউয়্যারিং:

এটা হল মূলত সন্তানকে স্লিংয়ে বহন করে নিয়ে চলা। এতে সদ্যোজাত কান্নাকাটিও করবে কম, আবেগ-অনুভূতিও বৃদ্ধি পাবে। আর এটা স্তন্যপান করানোর জন্যও আদর্শ। তবে সদ্যোজাতের ঘাড়ের পিছনে যাতে সাপোর্ট থাকে, সেটা নজর রাখা আবশ্যক। আর সন্তানের শ্বাসপ্রশ্বাস যেন বন্ধ না হয়ে যায়, সেটাও দেখা জরুরি। সন্তান কান্নাকাটি করলে তাকে কোলে নিয়ে আদর করতে হবে।

আরও পড়ুন: কয়েকজনের কাছে শাহরুখ দুর্বল হয়ে পড়েন, আমি তাঁদের অন্যতম: দীপিকা পাড়ুকোন

বেডিং:

সদ্যোজাত যাতে ভাল করে ঘুমোতে পারে, তার জন্য গদিটা ঠিকঠাক কি না, সেটা দেখা বড্ড জরুরি। এটা সন্তানের পাশাপাশি মায়ের জন্যও আবশ্যক। সন্তান ঘুমোলে মাকেও ঘুমিয়ে নিতে হবে। কারণ মায়ের যদি পর্যাপ্ত ঘুম হয়, তাহলে তাঁর মানসিক চাপের পরিমাণও কমে। এতে সন্তানেরই সুবিধা হবে। এর পাশাপাশি সন্তানকে মালিশও করতে হবে। কারণ এর উপযোগিতাও অসাধারণ।

বিওয়্যার অফ মাল্টিপল ইনপুটস বা কিছু বিষয়ে সতর্কতা:

সহজাত মাতৃত্বের মাঝে কোনও অস্বস্তিকর কিছু উপস্থিত হলে সেটা বন্ধ করা আবশ্যক। আসলে এই সময়ে বহু আত্মীয়ই নাক গলাতে চান। কিংবা ইন্টারনেট থেকেও নানা কিছু জানা যায়। এই সব মিলিয়ে সদ্যপ্রসূতি অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারেন। এই সময় মাথা ঠান্ডা করে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে।

বিলিভ বা নিজের উপর ভরসা:

সময়ের সঙ্গে সন্তান কী কারণে কান্নাকাটি করছে, সেটা বুঝতে সক্ষম হবেন। সে খিদের চোটে কাঁদছে না কি, শারীরিক অসুস্থতার জন্য কাঁদছে ইত্যাদি বুঝতে পারবেন।

ব্যালেন্স অ্যান্ড বাউন্ডারিস

সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধন মজবুত করার এই প্রক্রিয়া সন্তানও নিজেও ধীরে ধীরে গ্রহণ করে। সঙ্গীর সঙ্গেও সময় কাটাতে হবে। আর সেই সময় ফোনটিকে দূরেই রাখা আবশ্যক। সন্তানকে অতিরিক্ত সময় দিতে হবে।

Published by:Raima Chakraborty

First published:

Tags: Lifestyle tips, Mother, Newborn Baby

Scroll to Top