শিক্ষাক্ষেত্রে গাফিলতি আর অব্যবস্থাপনার নমুনা হামেশা সংবাদমাধ্যমে দেখা যায়। শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন—এসব ক্ষেত্রে অনিয়ম এখন অস্বাভাবিক বা অনিয়মিত কোনো ঘটনা নয়। ভুলে ভরা, খারাপ কাগজ-কালিতে ছাপা বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে আমাদের দ্বিধা হয় না। আবার বরাদ্দের বিপুল অংশ আমরা নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজে ব্যয় করছি, যেখানে পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান বাড়ানোর দিকে কোনো নজর নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার সংস্কার ও মান উন্নয়নে কমিশন গঠনের প্রস্তাব বারবার এসেছে। কমিশন গঠন করা যায় কি না, গঠন করলে এর কার্যপরিধি ও কার্যধারা কী বা কতটুকু হবে, এসব নিয়ে নতুন করে ভাবা যেতে পারে। কারণ, শিক্ষাব্যবস্থায় এমন কিছু সমস্যা রয়েছে, যেগুলো ঠিকমতো চিহ্নিত হয়নি কিংবা বিবেচনায় আনা হয়নি। এগুলো চিহ্নিত করে এবং বিবেচনায় নিয়েই শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজাতে হবে।
শিক্ষাবিদেরা বরাবরই বলছেন, শিক্ষকদের প্রাইভেট আর কোচিংমুখী প্রবণতা শিক্ষাক্ষেত্রে ধস নামিয়েছে। বাজারের গাইড বইও বাড়তি কোনো ফল দেয়নি। এরপরও শিক্ষার্থীরা কেন কোচিং আর গাইড ছাড়া পড়াশোনা করতে পারে না, সে প্রশ্নের উত্তর শিক্ষকদেরই দিতে হবে।
আধুনিক প্রযুক্তি পাঠদানের পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে পারত। তবু বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা এখনো কেন আধুনিকায়ন করা গেল না, সেটিও একটি প্রশ্ন। উচ্চতর গবেষণাক্ষেত্রে আমরা কেন পিছিয়ে আছি, কেন শিক্ষিত বেকার বাড়ছে, কেন মেধাবীরা শিক্ষকতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন—এ রকম অজস্র প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরি।