রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর খালটি যেন এক ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন অসংখ্য ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালটির অনেকাংশই ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
মোহাম্মদপুর বছিলার লাউতলা থেকে রামচন্দ্রপুর খালের শুরু। খালটি মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান, সাত মসজিদ আবাসিক এলাকা হয়ে চন্দ্রিমা হাউজিং ও বসিলা গার্ডেন সিটির মধ্য দিয়ে বুড়িগঙ্গাতে গিয়ে মিশেছে। সংশ্লিষ্ট তথ্য থেকে জানা গেছে খালটির দৈর্ঘ্য ৩.১ কিলোমিটার এবং প্রস্থ কোথাও ২০ ফুট আবার কোথাও ৩০ ফুট।

বছর খানেক আগে খালটিতে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হলেও বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং অতিরিক্ত ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালটি দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এই খালটি মোহাম্মদপুর এলাকার বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খালটিতে অতিরিক্ত ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে খালটি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে। প্রতিদিনই ফেলা হচ্ছে কঠিন ও তরল বর্জ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খালের বিভিন্ন অংশে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে। খালের আশেপাশে থাকা বাসিন্দারা নিয়মিত ময়লা আবর্জনা ফেলছে। এতে করে খালের গভীরতা কমে গেছে। খালের দুই পাশে বিভিন্ন রকমের আগাছা জন্মেছে। মানুষ চলাচলের কোনো সুব্যবস্থা নেই। খালের পাশে থাকা গরুর খামার থেকেও বর্জ্য ফেলতে দেখা গেছে।
আলমগীর নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বার্তা ২৪ ডট কমকে বলেন, সিটি করপোরেশন যখন খালটি খনন করে তখন খালটি অনেক প্রশস্ত ছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খালের দুই পাশে থাকা মাটিগুলো বৃষ্টির পানিতে ভেঙে খালে গিয়ে পড়েছে। এতে খালটি দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

মারুফ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, প্রায় ৭ থেকে ৮ দিন আগে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা খালটি পরিষ্কার করেছে। কিন্তু ভালোভাবে পরিষ্কার না করার কারণে খালটিতে আবারও ময়লা আবর্জনা জমে গেছে। খালটির আশেপাশে যে আগাছা গুলো জন্মেছে সেগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়নি বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে পরিবেশবিদ ইকবাল হাবিব বার্তা ২৪ কে বলেন, খাল রক্ষার জন্য যে ধরনের জনবল ও পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, তা সিটি করপোরেশনের নেই। বড় বড় কথা ও লোক দেখানো প্রচার চালিয়ে খালের পানি প্রবাহ ধরে রাখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, খাল ভালোভাবে খনন করে নদীর সাথে সংযুক্ত করতে হবে। তরল এবং কঠিন বর্জ্য খালে পড়তে দেওয়া যাবে না। খালের দুই পাড়ে মানুষের হাঁটাচলার জন্য সুন্দর ব্যবস্থা করতে হবে। তখন মানুষ আর খালে ময়লা আবর্জনা ফেলবে না। খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করতে হবে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, মানুষ যাতে খালে ময়লা আবর্জনা না ফেলে সেজন্য আমরা মানুষকে সচেতন করছি। এ বিষয়ে আমরা সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম চালু রেখেছি।