আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভারতীয় শিল্পপতিদের মাঝে অন্যতম রতন টাটা ৮৬ বছর বয়সে বুধবার ৯ অক্টোবর মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী এই ব্যক্তি মৃত্যুর আগে ৩৬০০ কোটি রুপি মূল্যের সম্পত্তি রেখে গেছেন যা বাংলাদেশি টাকায় ৫,১০০ কোটি টাকারও বেশি। এখন সবার মনে একটাই প্রশ্ন, কে হতে চলেছেন এই সম্পত্তির উত্তরাধিকার।
দ্যা ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে, তার মূল্যবোধের কারণে ব্যবসায়িক মহল তো বটেই, সাধারণ মানুষও রতন টাটাকে অত্যন্ত সম্মান করতেন। জেআরডি টাটার পরে ১৯৯১ সালে তিনি টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে টাটা গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য হিসেবে গড়ে ওঠে যার বর্তমান বাজার মূল্য ৩৪ লাখ কোটি রুপি। রতন টাটার নেতৃত্বেই টেটলি, কোরাস এবং তারপর জাগুয়ার ল্যান্ডরোভার অধিগ্রহণ করে টাটা গোষ্ঠী। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে দাড়ান তিনি।
রতন টাটার মৃত্যুর পর তার এই অঢেল সম্পত্তির উত্তরাধিকার কে হবেন এবং কে এই সম্রাজ্যের নেতৃত্ব দিবেন তা নিয়েই সবার মনেই প্রশ্ন জেগেছে যেহুতু তার কোন সন্তান নেই।
নোয়েল টাটা
নোয়েল টাটা, রতন টাটার সৎ ভাই নাভাল টাটার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান। বর্তমানে তিনি টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। ট্রেন্ট ও টাটা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবং টাইটান ও টাটা স্টিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত নোয়েল টাটা হতে পারেন রতন টাটার উত্তরাধিকার।
নেভিল টাটা
নোয়েল টাটার ছোট ছেলে নেভিল টাটার বয়স মাত্র ৩২। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যেই টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্গত ট্রেন্ট লিমিটেডের অধীনে স্টার বাজারের দায়িত্ব পালন করছেন। তারুণ্যের উদ্যম ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি তাকে টাটা গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রেখেছে।
লিয়া টাটা
নোয়েল টাটার মেয়ে লিয়া টাটা (৩৯) টাটা গ্রুপের হসপিটালিটি সেক্টরকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে তাজ হোটেলের অভাবনীয় সাফল্য এবং হসপিটালিটি সেক্টরের প্রবল বিকাশ তাকে রতন টাটার অন্যতম সম্ভাব্য উত্তরসূরী হিসেবে তুলে ধরছে।
মায়া টাটা
রতন টাটার উত্তরাধিকার এবং টাটা গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ হিসেবে আলোচনায় রয়েছে নোয়েল টাটার আরেক কন্যা মায়া টাটার নামও। ৩৪ বছর বয়সী মায়া টাটা গোষ্ঠীর ডিজিটাল সেক্টরে বিপ্লব এনেছেন, বিশেষ করে তার নেতৃত্বে লঞ্চ হওয়া টাটা নিউ অ্যাপ টাটার ডিজিটাল সাফল্যের উদাহরণ হয়ে উঠেছে।
রতন টাটার মোট আয়ের বড় অংশ-ই টাটা গ্রুপের হোল্ডিং কোম্পানি, টাটা সন্সের মাধ্যমে আসত। টাটা সন্সের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে বার্ষিক আড়াই কোটি টাকা পারিশ্রমিক ছিল রতন টাটার। তার আয়ের মধ্যে টাটা সন্সে তার যে সমস্ত ব্যক্তিগত শেয়ার রয়েছে, তার থেকে লভ্যাংশও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। রতন টাটার অনেক রিয়েল এস্টেট সম্পত্তিও রয়েছে। যার মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য হল মুম্বাইয়ের কোলাবায় সমুদ্রমুখী বাংলো। যার দাম ১৫০ কোটিরও বেশি।