স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বহুদিন ধরে চলা বাণিজ্য অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ একমত হয়েছে যে, ইইউ এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে মার্কিন বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।
আজ (২৮ জুলাই) সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, এই বহুল প্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেনের সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে। বৈঠকে দুই নেতা নতুন এই সমঝোতাকে একটি স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি বলে আখ্যা দিয়েছেন।
এর আগে ট্রাম্প ইইউ পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, যা ইউরোপীয় অর্থনীতির জন্য গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে আলোচনার মাধ্যমে তা কমিয়ে ১৫ শতাংশে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। চুক্তির আওতায় ইইউ কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক দ্রব্য, কৃষিপণ্য, বিমান ও যন্ত্রাংশে শুল্ক ছাড় পাবে। তবে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আগের ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।
চুক্তির অংশ হিসেবে ইইউ আগামী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি খাতে প্রায় ৭৫০ বিলিয়ন ডলার এবং সামরিক খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করবে। ইউরোপের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ বিনিয়োগ রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভন ডার লেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে দুই অঞ্চলের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৭৬ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ইউরোপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি ছিল প্রায় ৬০৬ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প একে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অসাম্যপূর্ণ ঘাটতি বলে উল্লেখ করেছিলেন এবং তার প্রশাসন বারবার বাণিজ্য ভারসাম্য আনতে চাপ দিয়ে আসছিল।
চুক্তিটি স্বাক্ষরিত না হলে স্পেনের ওষুধ, ফ্রান্সের চিজ, ইটালির চামড়া এবং জার্মানির ইলেকট্রনিক পণ্যের ওপর বড় শুল্ক আরোপ হতো। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইইউ-ও প্রস্তুত ছিল মার্কিন গাড়ির যন্ত্রাংশ, বোয়িং বিমানের যন্ত্রাংশ ও গরুর মাংসে শুল্ক বসাতে।