কাতারের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার পরপরই বিভিন্ন দেশ তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার রাতে কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। আল জাজিরার সাংবাদিক ওসামা বিন জাভিদের মতে, বিস্ফোরণের শব্দে কাতারের সাধারণ মানুষ ভীত হয়ে পড়ে এবং অনেকেই বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
কাতারের প্রতিক্রিয়া
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে “রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন” বলে আখ্যায়িত করেছে। কাতার স্পষ্ট করেছে, তারা এই ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাবে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কোনো আপস করবে না।
ইরানের অবস্থান
ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “এই হামলার উদ্দেশ্য কাতার নয়, বরং কৌশলগত বার্তা প্রদান।” তারা আরও উল্লেখ করে, কাতারের জনগণের প্রতি কোনো ক্ষতির ইচ্ছা তাদের ছিল না এবং ঐতিহাসিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ হামলার সত্যতা নিশ্চিত করলেও এখনও কোনো সরাসরি প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে তারা জানিয়েছে, হামলায় কেউ হতাহত হয়নি এবং ঘাঁটির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ফ্রান্স
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ কূটনৈতিক পথে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে সব পক্ষকে সংযত হতে হবে।” তিনি আন্তর্জাতিক সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের ওপর জোর দেন।
সৌদি আরব
সৌদি আরব এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং কাতারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। রিয়াদের মতে, এই হামলা গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
বাহরাইন
বাহরাইনও হামলার কঠোর সমালোচনা করে কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেয়। দেশটি কাতারকে পূর্ণ সমর্থন ও সংহতি জানায়।
স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের ধারণা, হামলার আগে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।