দেশে হ্যান্ড-ফুট অ্যান্ড মাউথ রোগের সংক্রমণ বাড়ছেই। শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ রোগী এমন উপসর্গ নিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সাধারণত ৬/৭ বছরের কম বয়সীদের এ রোগে সংক্রমিত হতে দেখা যায় বলে মত তাদের। এ রোগের সুনির্দিষ্ট ওষুধ না থাকায় অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডাক্তাররা।
জ্বর, ঠান্ডা ও ডেঙ্গুর সাথে এবারের বর্ষায় শিশুদের আরেক ভোগান্তির নাম হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ। অতিমাত্রায় সংক্রমণশীল রোগটির প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে দেশজুড়ে। রাজধানীর শিশু হাসপাতালে বহির্বিভাগে আসা রোগীদের প্রায় ২০ শতাংশের উপসর্গই এমন।
চিকিৎসকরা বলছেন, এটি নতুন কোনো রোগ নয়। উপসর্গ মিলে যাওয়ায় অনেকেই একে জলবসন্ত বলে ধারণা করতো।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল এন্ড ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সর্দি, কাশি ও হাঁচির মাধ্যমেও এই রগ ছড়াচ্ছে। এবং অন্য শিশু দ্রুত আক্রান্ত হচ্ছে। খাওয়ার প্লেট গ্লাস অন্য কেউ ব্যবহার করলেও সেখান থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা সারাবন তাহুরা বলেন, এটি চিকেন পক্সের মতো দেখতে। প্রথমে যেহেতু শুরু হয় গলা থেকে তখনই বাচ্চারা খাওয়া ছেড়ে দেয়। পরে জ্বর হয়। পরে মুখ থেকে হাতে, পায়ে ও পায়ের তালুতে দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে সংক্রামক রোগ এইচএফএম। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগও রোগটিকে শিশুদের সাধারণ রোগ হিসেবে দেখে। তবে সংক্রমণ ও ভোগান্তি এড়াতে আক্রান্তদের স্কুলে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, এতে মৃত্যুহার নেই বললেই চলে। সাধারণত ৭-১০ দিনে এমনিতেই সেরে যায়। তবে উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে পরবর্তীতে ইনফেকশনের আশঙ্কা থাকে।
শিশু বিশেষজ্ঞ সারাবন তাহুরা বলেন, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবে ওজন অনুসারে। আর এই সময়ে বেশি বেশি লিকুইড জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
অধ্যাপক ডা মো জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কোনোভাবেই এন্টিবায়োটিক দেয়া যাবে না। যদি এটা মারাত্মক ইনফেকশনে রূপ নেয় সেক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক দিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
সাধারণত ৭ বছরের কম বয়সীদের এই রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা বেশি। সংক্রমণ এড়াতে শিশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ তাদের।
/এনএএস