বিদেশ থেকে পেশাদার শিল্পীদের এনে কাজ করাচ্ছে বলিউড। অথচ যারা সে কাজ করছেন, তাদের ৯০ শতাংশের কাছে বলিউডে কাজ করার বৈধ অনুমোদন অর্থাৎ ওয়ার্ক পারমিটই নেই! এমন দাবি করেছে ভারতীয় সিনে ইন্ডাস্ট্রির কলাকুশলী ইউনিয়ন।
হিন্দি সিনেমায় আজকাল প্রায়ই দেখা যায় বিদেশি অভিনয়শিল্পীদের। ধারণা করা হয়, বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বিদেশি অভিনয়শিল্পীর চেয়ে পর্দার পেছনে কাজ করা বিদেশি পেশাদারদের সংখ্যা আরও বেশি। তবে ভারতীয় চলচ্চিত্র কলাকুশলী ইউনিয়নের দাবি, ভারতীয় সিনেমায় কাজ করা বেশিরভাগ বিদেশিই অবৈধভাবে কাজ করছেন।
সম্প্রতি বিদেশি পেশাদারদের ওপর অনেকটা নির্ভর হয়ে পড়ছে ভারতীয় বিনোদনজগৎ। যে তালিকায় আছেন হেলেন, মনীষা কৈরালা, ক্যাটরিনা কাইফ, জ্যাকলিন ফার্নান্দেজ, অ্যামি জ্যাকসন, জিজেল মোন্টেরিও, হেজেল কিচ, নারগিস ফাখরি, ব্রুনা আবদুল্লাহ, ক্যান্ডিজ বাউচার, সোফিয়া হায়াত, সানি লিয়ন, নোরা ফাতেহির মতো তারকারা।
শুধু অভিনেত্রীরাই নয়, সিনেমাটোগ্রাফার থেকে শুরু করে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, জুনিয়র আর্টিস্ট, ড্যান্সার, মেকআপ আর্টিস্ট, হেয়ার স্টাইলিস্ট, অ্যাকশন ডিরেক্টর, স্ট্যান্টম্যান, কস্টিউম ডিজাইনার পর্যন্ত প্রায় সবক্ষেত্রেই বিদেশি পেশাদারদের নিয়োগের প্রবণতা বেড়েছে।
অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রির তুলনায় ভারতে প্রতিবছর চলচ্চিত্র মুক্তি পায় অনেক বেশি। এ ইন্ডাস্ট্রিতে বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার। হিন্দি ছাড়াও দক্ষিণ ভারতে বেশ কয়েকটি বড় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি আছে। যেখানে বিপুলসংখ্যক শিল্পী, কলাকুশলীরা কাজ করেন। এদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশি পেশাদারেরা প্রাধান্য পাচ্ছেন। এতে করে কাজ হারাচ্ছেন অনেক ভারতীয়।
মূলত দুই কারণে বলিউড যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, উজবেকিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে পেশাদারদের নিয়ে এসে কাজ করাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, বিদেশ থেকে সেই কাজের জন্য যোগ্যতম ব্যক্তিদেরই নিয়ে আসা হচ্ছে, দ্বিতীয়ত, তাদের অবদানে উপকৃত হচ্ছে ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্প। যদিও এসব দাবি মানতে নারাজ ইউনিয়নগুলো।
ফেডারেশন অব ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনে এমপ্লয়িজের চেয়ারম্যান অশোক দুবে বলেন, ৯০ শতাংশ বিদেশি পেশাদার বেআইনিভাবে ভারতে কাজ করছেন। তাদের কাছে যথাযথ কাগজপত্রও নেই। পুরো বিষয়টি একাধিকবার মুম্বাই পুলিশের নজরে এনেছি। কিন্তু আমাদের অভিযোগকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে না পুলিশ। আমাদের ইউনিয়নে অন্তত তিন লাখ পেশাদার রয়েছেন। আমরা তাদের জন্য লড়ে যাবো।
এদিকে, ভারতে পাকিস্তানি অভিনেতাদের বিরুদ্ধে যেভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে কেনো অন্যদেশের পেশাদারদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।
ভারতে চলচ্চিত্রের পেশাদারদের সংগঠনের বিভিন্ন সূত্রের দাবি, অনেক বিদেশি ভারতে পর্যটক ভিসা নিয়ে কাজ করেন। কিন্তু পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে মুম্বাই পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি এখনও।
/এসএইচ