ওয়াশিংটন, ১৮ মার্চ – ইউক্রেন শান্তিচুক্তির বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এরই মধ্যে ‘অনেক বিষয়ে’ একমত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শান্তিচুক্তি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) এই দুই নেতার বহুল প্রত্যাশিত ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এ কথা জানান। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
পোস্টে তিনি বলেন, যদিও কিছু বিষয়ে সম্মতি হয়েছি আমরা। তবে এখনও অনেক কিছু কাজ করা বাকি।
ট্রাম্প লিখেছেন, প্রতি সপ্তাহে উভয় পক্ষের আড়াই হাজার সেনাসদস্য মারা যাচ্ছে। এটি এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।
এর আগে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমরা চেষ্টা করছি যেন একটি শান্তিচুক্তি করা যায়। যুদ্ধবিরতি ও একটি শান্তিচুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি। আমি মনে করি আমরা তা করতে পারবো।
সোমবার রাতে তার ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পুতিনকে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার অভিযোগ করে বলেছেন, এই প্রস্তাব অনেক আগেই বাস্তবায়িত হতে পারতো।
ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যেও যুদ্ধবিরতির আলোচনা কতদূর অগ্রসর হয়েছে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
জেদ্দায় ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, আলোচনা মূলত একটি আলোচনার প্রক্রিয়া কেমন হবে তা নিয়ে হয়েছে, নির্দিষ্ট শর্তাবলি নিয়ে নয়।
মস্কোতে বৃহস্পতিবার পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফও আরও সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
এদিকে পুতিন যে শান্তিচুক্তিতে আগ্রহী, সে বিষয়ে তাঁকে প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার জন্য জেলেনস্কির সাহসের প্রশংসা করেন এবং রাশিয়াকে একই কাজ করতে চ্যালেঞ্জ করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘অনেক মৃত্যু হয়েছে। অনেক জীবন ধ্বংস হয়েছে। অনেক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। বন্দুকের শব্দ অবশ্যই থামাতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি পুতিনকে ‘সম্পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি’ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংসদ সদস্যদের বলেন, তিনি পুতিনের কাছ থেকে শান্তিচুক্তির বিষয়ে কোনও ইতিবাচক সংকেত দেখেননি।
তিনি সতর্ক করে দেন যে, যুক্তরাজ্য এবং তার মিত্রদের হাতে আরও অনেক বিকল্প রয়েছে যা রাশিয়াকে ‘গুরুত্বসহকারে’ আলোচনার টেবিলে আনতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে হোয়াইট হাউজ ট্রাম্প-পুতিন আলোচনার আগের দিন কিছুটা আশাবাদী সুরে কথা বলেছে।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাম্প শান্তিচুক্তি নিশ্চিত করতে ‘দৃঢ় প্রতিজ্ঞ’।
আলোচনায় কী থাকবে, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সীমান্তে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে যা ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে আলোচনায় এসেছে এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার ফোনালাপে এটি আলোচিত হবে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন
আইএ/ ১৮ মার্চ ২০২৫