আজ ৩১ ডিসেম্বর প্রখ্যাত গায়ক রফিকুল আলমের জন্মদিন। এ বছর ৭০-এ পা রাখলেন এই শিল্পী।
কেমন কাটল এই বিশেষ দিন? জানতে চাইলে বার্তা২৪.কমকে রফিকুল আলম বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো কাটছে। জন্মদিনের প্রথম প্রহরেই কেক কেটেছি পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে। আমার ছেলের (সংগীতশিল্পী ফারশিদ আলম) শ্বশুর বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন খালিদ তার নিজস্ব আইসক্রিম পার্লার থেকে একটি স্পেশ্যাল কেক পাঠিয়েছিলেন। সেটি কেটেই জন্মদিন শুরু। এরপর তো সারাদিন বাড়িতে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব এসেছে।’

তিনি জানান, আমি কখনোই বাইরের খাবার পছন্দ করি না। তাই জন্মদিনেও বাড়িতেই আয়োজন করি। আমার বয়সী বন্ধু বান্ধব আসে। আমার ভাই বোনেরা আসে, ভাতিজা ভাতিজিরাও আসে। এখন তো আমাদের তৃতীয় প্রজন্ম অর্থাৎ নাতি নাতনিরাও আসে আমার জন্মদিনের উইশ করতে। তাদের সঙ্গেই আনন্দের সময় কাটে।
তবে এবার সংগীতাঙ্গনের কেউ আসেনি। আমার বন্ধু শিল্পী সুবীর নন্দি আর শাম্মী আখতার বেঁচে থাকতে প্রতি বছরই তারা বাড়িতে এসে আমাকে জন্মদিনের উইশ করত। ৭০ তম জন্মদিনের এই বিশেষ মুহূর্তে তাদের দুজনকে খুব মনে পড়ছে। আল্লাহ তাদের আত্মার শান্তি দিক।
রফিকুল আলমের জন্মদিনের পরের দিনই নতুন বছর শুরু হয়। ২০২৪-এ তার প্রত্যাশা কি জানতে চাইলে এই তারকা শিল্পী বলেন, ‘প্রথমত, আমার পরিবার ও কাছের মানুষদের সুস্বাস্থ প্রত্যাশা করি। একটি শান্তিময় সমাজে থাকতে পারি সেই কামনা করি।

আর সংগীতের মানুষ হিসেবে চাই, গানের অঙ্গন যেন এ বছর আরও বেশি উজ্জ্বল হয়। জাতীয় নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি গান নিয়ে নানা ধরনের কাজ হবে। আমিও সেটির সঙ্গে জড়িত থাকব বলে আশা করি। আর ২০২৩-এ আমরা গানের অঙ্গনের অনেক গুণী মানুষকে হারিয়েছি। নতুন বছরে কেউ যেন আমাদের ছেড়ে না যায় সেই প্রত্যাশা করি।’
বাংলাদেশের কন্ঠসৈনিক এবং কিংবদন্তীতূল্য শিল্পী রফিকুল আলম। ষাটের দশক থেকে গানের জগতের সাথে যুক্ত রয়েছেন। রাজশাহীতে বড় হওয়া এই শিল্পী সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন পন্ডিত হরিপদ দাস এবং ওস্তাদ সগিরুউদ্দীন খাঁনের কাছে। এরপর কণিকা বন্দোপাধ্যায় এবং অজিত রায়ের কাছে রবীন্দ্রসংগীত ও অতুলপ্রসাদের গান শিখেছেন।
প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী আবিদা সুলতানা তার জীবনসঙ্গী। তাদের দাম্পত্য জীবন তারকাদের কাছে আদর্শ। তাদের একমাত্র পুত্র সন্তান ফারশিদ আলমও গানের সঙ্গে যুক্ত।

৩০০টির বেশি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রফিকুল আলম। দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও অসংখ্য সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন। তার আটটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। যার মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্র, আরেকটি লন্ডন থেকে। তিনি বাংলা, ইটালিয়ান, ফ্রেঞ্চ, ব্রাজিলিয়ান, মালদিভিয়ান, এরাবিক, উজবিক, তেলুগু, গুজরাতি, নেপালিজ, জাপানিজ, চাইনিজসহ ২৮টির বেশি ভাষায় সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।