দিঘায় কাতারে কাতারে পর্যটকদের ভিড়, তবুও ‘ওঁদের’ ডাকছে না কেউ! রোজগার কমতেই এখন সবাই দিশেহারা

দিঘায় কাতারে কাতারে পর্যটকদের ভিড়, তবুও ‘ওঁদের’ ডাকছে না কেউ! রোজগার কমতেই এখন সবাই দিশেহারা

Last Updated:

একসময়ের ব্যস্ত মুখগুলো আজ নিস্তব্ধ। পুজো এলেও তাঁদের নেই আর আনন্দ, বরং সংসার চালানো ও সন্তানের জামা কাপড় কেনার অনিশ্চয়তা ঘিরে রেখেছে।

+

দিঘায় কাতারে কাতারে পর্যটকদের ভিড়, তবুও ‘ওঁদের’ ডাকছে না কেউ! রোজগার কমতেই এখন সবাই দিশেহারা

দিঘার সমুদ্র সৈকত

দিঘা, পূর্ব মেদিনীপুর, মদন মাইতি: একসময় দিঘার পর্যটন মানেই ছিল ফটোগ্রাফারদের ভিড়। ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখতে পর্যটকরা তাঁদের কাছেই ছবি তুলতেন। কিন্তু স্মার্টফোনের যুগে সব পাল্টে গেছে। এখন সবাই নিজেই ছবি তুলে নেন, ফটোগ্রাফারদের আর ডাকেন না কেউ। একসময়ের ব্যস্ত মুখগুলো আজ নিস্তব্ধ। পুজো এলেও তাঁদের নেই আর আনন্দ, বরং সংসার চালানো ও সন্তানের জামা কাপড় কেনার অনিশ্চয়তা ঘিরে রেখেছে। স্মার্টফোনের কড়া প্রতিযোগিতায় দিঘার ঐতিহ্যবাহী ফটোগ্রাফাররা হারিয়ে যেতে বসেছেন।

একটা সময় ছিল যখন দিঘায় ভ্রমণ মানেই সঙ্গে থাকত ফটোগ্রাফাররা। সমুদ্রের ঢেউয়ের পাশে দাঁড়িয়ে পরিবার বা বন্ধুদের ছবি তোলা, সেই ছবিগুলো ফ্রেমে বাঁধিয়ে ঘরে সাজান—সবটাই যেন দিঘা ভ্রমণের এক অমূল্য স্মৃতি ছিল। পুজোর সময় হলে তো কথাই নেই। ভিড় বাড়ত, সঙ্গে ফটোগ্রাফারদেরও রোজগার বাড়ত। অনেকেই অপেক্ষায় থাকতেন, কখন পর্যটকরা ডাকবেন আর হাতে ক্যামেরা নিয়ে ছুটে যাবেন ছবি তুলতে।

কিন্তু সময় বদলেছে। প্রযুক্তি এখন সবার হাতে। স্মার্টফোনের সহজলভ্যতা মানুষের জীবনে অনেক সুবিধা এনে দিয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে বদলে দিয়েছে অনেক মানুষের পেশার চিত্রও। আগে যেখানে ছবি তোলার জন্য ফটোগ্রাফারের ওপর নির্ভর করতে হতো, এখন পর্যটকরা নিজেরাই মোবাইল ফোনে অসংখ্য ছবি তুলে ফেলেন মুহূর্তের মধ্যে। সেলফি, গ্রুপফি কিংবা নানা অ্যাঙ্গেল থেকে ছবি—সবই সম্ভব স্মার্টফোনে। ফলে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের দিকে আর আজ কেউ তাকান না। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার সেই ফটোগ্রাফারদের মুখের হাসি আজ উধাও। একসময় পুজো এলে তাদের চোখেমুখে থাকত উচ্ছ্বাস, কারণ বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হত। কিন্তু এখন উৎসবের মরশুম এলেও তাদের বুক ভরে ওঠে দুশ্চিন্তায়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন

সন্তানদের নতুন জামা কাপড় কিনে দেবেন কি না, সংসারের খরচ চালাতে পারবেন কি না—এই অনিশ্চয়তায় দিন কাটে। দিঘার ব্যবসা ও পেশার ইতিহাসে একসময় যাঁরা অপরিহার্য অংশ ছিলেন, সেই ফটোগ্রাফাররা এখন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছেন। স্মার্টফোনের ক্যামেরা তাঁদের জীবিকার আলো কেড়ে নিয়েছে। সামনে পুজো এলেও আজ তাদের মনে নেই কোনও আনন্দ, নেই কোনও আশা। বরং থেকে গেছে শুধু অনিশ্চয়তা আর দুঃখের ছায়া।

Scroll to Top