লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই অভিযোগ দাখিল করেন।
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিলের পর এসংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে ডাঃ ফয়েজ আহমেদের নিজ বাসার ছাদে নিয়ে আঘাত করে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। ডাঃ ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত এবং লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন। হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে তার সন্তান ডা: হাসানুল বান্না আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহি উদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহাম্মদ ছিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র্যাব মেঃ জেঃ জিয়াউল আহসান, র্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এছাড়া আরও বলা হয়েছে যে, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র্যাবের স্টিকার যুক্ত একটি গাড়ীতে করে বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙ্গে ফেলে এবং ভিকটিম ডাঃ ফয়েজ আহমেদকে নিজের বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়া যায়। এই সময় আইন- শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা (আসামীগন) বিল্ডিং ঢুকে সকল কক্ষের দরজার তালা ভেঙ্গে তল্লাশী ও ভাংচুর চালায়। ডাঃ ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়া তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে মাথার সম্মুখ ভাগ ও নাকে মুখে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটাইয়া গুরুতর জখম করে।উর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশে আসামী তারেক সাইদ মোহাম্মদ তাহার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডাঃ ফয়েজ আহমেদ এর ডান হাঁটুর উপরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে, তাতে ওই স্থানে গভীর ক্ষত হয়ে ব্যাপক রক্তপাত হয়। এই সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ডাঃ ফয়েজ আহমেদকে তৃতীয় তলার ছাদের ওপর থেকে উপুড় করিয়া (অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে দিয়া) বিল্ডিং এর সামনের অংশের নিচে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে তার মরদেহ লক্ষীপুর সদর হাসপাতালে রেখে দিয়ে যায়। তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত মানবতা বিরোধী অপরাধটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজকের অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ঘটনাটির সুষ্ঠ বিচার কামনা করছি।
