রাজধানীর নিউমার্কেটে এলাকার পরিত্যক্ত ৪ নাম্বার ফুট ওভার ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল। ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজটি যেকোনো সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
ইতোমধ্যে ওভারব্রিজটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ সাইনবোর্ড লাগিয়ে দায় সারছে।
শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা অথচ রাস্তা পারাপারে বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই, তাই ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের। অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণ ফুটওভার ব্রিজটিতে দোকান বসিয়ে রমরমা চাঁদা বাণিজ্য করছে একটি মহল ।
সুত্র বলছে, এই ওভারব্রিজ থেকে মাসে চাঁদা উঠে লাখ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সরগরম থাকে এই ফুট ওভার ব্রিজটি। নোটিশ দেওয়ার পরেও একদিনের জন্য থামেনি এই কর্মযজ্ঞ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক হকার বার্তা২৪ ডটকম কে জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ ফুটওভার ব্রিজটিতে দোকান বসানোর জন্য প্রত্যেক হকারকে প্রতিদিন দিতে হচ্ছে প্রায় ২০০ টাকা চাঁদা। আর এই টাকার সমন্বয় করেন ওভারব্রিজের লাইনম্যান মিজান মিয়া। এই হিসেবে ৪০ জন হকার থেকে প্রতিদিন চাঁদা ওঠে প্রায় আট হাজার টাকা। প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা চাঁদা ওঠে মাসে। বছরে এই টাকার অঙ্ক দাঁড়ায় ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
![ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজে হাজার মানুষের যাতায়াত, দূর্ঘটনার শঙ্কা ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজে হাজার মানুষের যাতায়াত, দূর্ঘটনার শঙ্কা](https://imaginary.barta24.com/resize?width=700&quality=75&path=uploads/news/2022/Mar/19/1647706946984.jpg)
সার্বিক বিষয়ে ফুটওভার ব্রিজে দাঁড়িয়ে কথা হয় লাইনম্যান মিজান মিয়ার সঙ্গে। তিনি ছয় বছর ধরে এই ওভারব্রিজে হকারি করেন। বিক্রি করেন পাপস। ঝুঁকিপূর্ণ ওভারব্রিজের সাইনবোর্ডের বিষয়ে মিজান বার্তা২৪ ডটকম কে বলেন, ‘ভাই এমন সাইনবোর্ড আগেও লাগাইছে। কিসের জন্য লাগাই, কিসের জন্য খুইল্লা নেয়, এগুলো তো আমরা জানি না।’ হকারি করার জন্য কাউকে চাঁদা দিতে হয় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যবসা করতে হলে তো কিছু দিতে হয়।’
ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, প্রকৌশলগত দিক বিবেচনা করে ডিএসসিসির আঞ্চলিক কমিটি তা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এক মাস আগে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে।
পাঁচ সদস্যের এ আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক হলেন ডিএসসিসির আঞ্চলিক-১ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা নাজনীন। সদস্যসচিব হলেন অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল। এ কমিটি পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে এ সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির কাছে সুপারিশ পেশ করেছে।
কারিগরি কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘কারিগরি কমিটির প্রধান হিসেবে বিষয়টি নিয়ে আমি খুব উদ্বিগ্ন। ঝুঁকির মধ্যে মানুষ পারাপার হচ্ছে। যেকোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এটা ঝুঁকিপূর্ণ অফিসিয়ালি ঘোষণা দিয়েছি। আগামী সপ্তাহে এটা ভাঙার জন্য নির্দেশনা দেব। তার আগে এখন বড় লোহার বার দিয়ে ফুট ওভার ব্রিজের যাতায়াত আমরা বন্ধ করে দেব।’
ঝুঁকিপূর্ণ ফুটওভারব্রিজ ভেঙে অত্যাধুনিক ওভারব্রিজ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ। তিনি বলেন, নিউ মার্কেটের ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের বিষয়ে কয়েক দিনের মধ্যে অ্যাকশন নেওয়া হবে।এটা ভেঙে অত্যাধুনিক ওভারব্রিজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে ওভারব্রিজ দৃষ্টিনন্দন হয়, সে বিষয়েও চিন্তা করা হচ্ছে।’