জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বিতর্কিতদের দিয়ে হল কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
রোববার ১৭ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সহ-সভাপতি আবু আফসান ইয়াহিয়াসহ শীর্ষ নেতারা ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আসেন।
এ সময়, পূর্ব থেকে অবাঞ্চিত ঘোষিত জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকসহ শীর্ষ পাঁচ নেতা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে শাখা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা ও উত্তেজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে বাবর-অনিকসহ শাখা ছাত্রদলের সুপার ফাইভের অনুসারী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু আফসান ইয়াহিয়া সহ জাবির শীর্ষ পাঁচ নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার ভিতরে আটকা পড়েন। সেসময়, উত্তেজিত বিদ্রোহী গ্রুপের নেতাকর্মীরা ‘বাবর-অনিকের কমিটি, মানি না মানবো না’, ‘বাবরের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘লীগ দিয়ে কমিটি, মানি না মানবো না’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
এসময়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর একেএম রাশেদুল আলম তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষক লাউঞ্জে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে আলোচনা অসমাপ্ত থাকা অবস্থায় ওইদিন বিকেল সোয়া আড়াইটার দিকে জাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল করে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বিদ্রোহীদের দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও নাকচ করে দেন তারা। পরবর্তীতে পুনরায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে ক্যাফোটেরিয়ায় আলোচনা সভা করেন নাছির উদ্দিন নাছির।
বিদ্রোহীদের তোপের মুখে ও ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনির শিকার হয়ে জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক-সদস্য সচিবসহ শীর্ষ ৫ নেতা ক্যাফেটেরিয়ার বাইরে অবস্থান করেন।
আলোচনা চলাকালে বিদ্রোহী গ্রুপের নেতারা জাবি ছাত্রদলের মধ্যকার বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে শাখা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তির জন্য ১২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন।
তাদের অভিযোগ, “শাখা ছাত্রদলে অর্থের বিনিময়ে পদ দেওয়া, ছাত্রলীগ-শিবিরের লোকদের পদায়ন, হত্যা মামলার পলাতক আসামী, ছিনতাইকারীদের পদায়ন, যোগ্যদের বাদ দিয়ে সুপার ফাইভের মধ্যে হল কমিটি ভাগ বাটোয়ারা করার ঘটনা ঘটিয়েছে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক-সদস্য সচিব। রোববার ১৭ আগস্ট রাত ১২ টার মধ্যে জাবি ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা না করলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদল দায়ী থাকবে বলে তারা ঘোষণা দিয়েছেন।”
তবে জাবি ছাত্রদলের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে কিছু অসংগতি থাকলেও থাকতে পারে। সেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। কিন্তু এটার সুযোগ নিয়ে একটি গোষ্ঠী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে।