এআই নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক ঐক্যের তাগিদ জাতিসংঘ প্রযুক্তি প্রধানের

এআই নিয়ন্ত্রণে বৈশ্বিক ঐক্যের তাগিদ জাতিসংঘ প্রযুক্তি প্রধানের

জাতিসংঘের শীর্ষ প্রযুক্তি কর্মকর্তা ডরিন বগদান-মার্টিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবস্থাপনায় বিশ্বব্যাপী একত্রিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, বিভিন্ন দেশের খণ্ডিত ও স্ববিরোধী নীতি গ্রহণের ফলে প্রযুক্তির ঝুঁকি ও বৈষম্য আরও বাড়তে পারে।

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব বগদান-মার্টিন বলেন, সঠিক সময় এখনই, একটি কার্যকর বৈশ্বিক কাঠামো তৈরির জন্য, যাতে প্রযুক্তির সুফল সবাই পেতে পারে।

তিনি বলেন, এআই মানবজাতির কল্যাণে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এর সঙ্গে রয়েছে তথ্য বিকৃতি, ডিপফেইক ভিডিও, কর্মসংস্থান হ্রাস ও সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা। এজন্য সমন্বিত পরিকল্পনার বিকল্প নেই।

যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও চীনের পথ আলাদা, সংলাপ জরুরি

বর্তমানে বিভিন্ন দেশ এআই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিচ্ছে। এই প্রসঙ্গ টেনে বগদান-মার্টিন বলেন, ইউরোপের নিজস্ব নীতি আছে, চীনের পথ আলাদা, আর এখন যুক্তরাষ্ট্রও এককভাবে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ‘কম বিধিনিষেধ ভিত্তিক’ এআই কৌশলের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি এখনো সেটি হজম করার চেষ্টা করছি।

এখনও ৮৫ শতাংশ দেশে নেই জাতীয় কৌশল

আইটিইউ প্রধান জানান, এখনও বিশ্বের প্রায় ৮৫ শতাংশ দেশেরই এআই নিয়ে কোনো জাতীয় নীতি বা কৌশল নেই। যেসব দেশে কৌশল আছে, সেগুলোর প্রায় সবগুলোই প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও অবকাঠামো বিনিয়োগে মনোযোগী হলেও নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে খোলামেলা আলোচনা প্রয়োজন।

প্রযুক্তির সুফল নিশ্চিত করতে নারীর অংশগ্রহণও জরুরি

আইটিইউর ১৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী মহাসচিব বগদান-মার্টিন বলেন, নারীর অংশগ্রহণ এখনো পর্যাপ্ত নয়, বিশেষ করে এআই খাতে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বে এখনও ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত, অর্থাৎ এআইর সুযোগও তাদের কাছে পৌঁছায়নি। তাই বৈশ্বিক প্রচেষ্টা না থাকলে এআই বৈষম্যকেই আরও বাড়িয়ে তুলবে।

এই ৫৯ বছর বয়সী কর্মকর্তা জানান, দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তার ওপর অতিরিক্ত সফলতা দেখানোর চাপও রয়েছে।

তিনি তার দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য পুনর্নির্বাচনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনও তাকে সমর্থন করছে।

“এখনো অনেক কাজ বাকি,” বলেন তিনি দৃঢ়ভাবে।

Scroll to Top