আপাতভাবে ইরানের সামনে দুটি পথ খোলা। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯টি সামরিক স্থাপনা রয়েছে, প্রায় ৫০ হাজার সেনা রয়েছে। ইরান নিজে, অথবা তার কোনো স্থানীয় মিত্রদের (বা ‘প্রক্সি’র) মাধ্যমে এসব স্থাপনার ওপর হামলা করতে পারে। কিন্তু সেই হামলার অর্থ হবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই সংঘাতে পুরোপুরি টেনে আনা। মনে রাখা ভালো, এই যুদ্ধে ইরান একা, তার পাশে অন্য কোনো দেশ বা শক্তি নেই। রাশিয়া বা চীন মুখে যত হম্বিতম্বি করুক, অস্ত্র বা সৈন্য দিয়ে সে ইরানের পাশে দাঁড়াবে, তা একদমই অবাস্তব অলস কল্পনা। অতএব যুক্তরাষ্ট্রকে পুরোমাত্রায় যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলা মোটেই সুবুদ্ধির পরিচায়ক হবে না।
অবশ্য গতকাল সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকে মার্কিন স্থাপনায় ইরান হামলা চালিয়েছে। যদিও কাতার বলেছে, এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এখন যুক্তরাষ্ট্র কী করে, সেটি দেখার বিষয়। সিএনএন জানিয়েছে, হামলার বিষয়ে কাতারকে আগেই সতর্ক করেছিল ইরান। আর কাতার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল। অর্থাৎ পুরো বিষয়টিই ঘটেছে সকল পক্ষের জ্ঞাতসারেই।
ইরানের পক্ষে অন্য পদক্ষেপ হতে পারে তার নিয়ন্ত্রণাধীন হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। এতে তেল সরবরাহে বাধা পড়বে, জ্বালানির দাম বাড়বে, বাংলাদেশের মতো বিদেশি সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল দেশের জন্য বিপর্যয় নেমে আসবে। সমস্যা হলো, এর ফলে ইরান নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তার জ্বালানি পণ্যের প্রধান ক্রেতা চীন ও ভারত, এই প্রণালি ব্যবহার করেই সে তেল সরবরাহ করা হয়। তার অর্থনীতি এমনিতেই নাজুক, এর ফলে সংকট আরও বাড়বে।