স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৮ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:০০
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের মুখোমুখি হয়ে শুরুতে রীতিমতো খাবি খাচ্ছিল বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা দলটা মাত্র ৩৫ রানে হারিয়ে ফেলে পাঁচ উইকেট! সেই বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত থেমেছে ২২৮ রানে গিয়ে।
মাঝখানের প্রতিরোধটা দুই তরুণ তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলি অনিকের। দলের ব্যাটিং ধসের মুখে দাঁড়িয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১৫৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছেন দুজন। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি এটা। শেষ দিকে বাঁ-পায়ের পেশিতে টান পেয়েছিলেন হৃদয়। তবে মাঠ থেকে উঠে না গিয়ে ব্যাটিং করে গেছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
তাতে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটা পেলেন তরুণ হৃদয়। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছেন ঠিক ১০০ রান করে। ১১৮ বল খেলে ৬টি চার ২টি ছয়ে এই রান করেছন হৃদয়। এছাড়া জাকের আলি করেছেন ৬৮ রান।
দলের ব্যাটিং ধসের মুখে ব্যাট করতে নেমে দুজন শুরুতে রানের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্রিজে পড়ে থাকতে চেয়েছেন। তবে দুজনের জুটিতে দলের রান স্বাচ্ছন্দের একটা জায়গায় পৌঁছুলে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চমকপ্রদ এক একাদশ নিয়ে ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। তরুণ পেস তারকা নাহিদ রানাকে রাখা হয়নি একাদশে। মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও নেই।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের সূচনাটা ছিল আরও চমকপ্রদ। মাত্র ৩৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ! ওপেনার সৌম্য সরকার রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও রানের খাতা খোলার আগে বিদায়। হারশিত রানাকে কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে বল তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
চারে নেমেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মোহাম্মদ শামির দুর্দান্ত একটা বলে খেলতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে মাত্র ৪ রান করতে পেরেছেন মিরাজ। তারপর পর পর দুই বলে তানজিদ হাসান তামিম ও মুশফিকুর রহিমকে ফেরান অক্ষর প্যাটেল।
দুজনেই অল্প টার্নে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটরক্ষককে। ওপেনার তামিম অনেকক্ষণ ক্রিজে থাকার পর আউট হয়েছেন ২৫ বলে ২৫ রান করে। মুশফিক ফিরেছেন প্রথম বলেই। তারপর বাংলাদেশ এক পেরুতে পারবে কিনা সেটাই ছিল প্রশ্ন।
সেখান থেকেই হৃদয়-জাকেরের প্রতিরোধ। দুজনই অবশ্য আউটের সুযোগ দিয়েছিলেন। ভারতের ফিল্ডাররা দুজনের ক্যাচ ফেলেছেন তিনটি। ক্রিজে নেমে শুরুতে উইকেট আগলে ধরে রাখতে চেয়েছেন দুজন। রানের জন্য কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি। তবে ফিফটি পেরুনোর পর হাত খুলেছেন দুজনই।
জাকের অবশ্য খুব বেশি সময় হাত খুলে খেলতে পারেননি। মোহাম্মদ শামির স্লো বল হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন লং-অনে। সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে ভুল করেননি বিরাট কোহলি। ৬৮ রানে থেমেছে জাকেরের প্রতিরোধের ইনিংসটি। ১১৪ বল খেলে ৪টি চারের সাহায্যে এই রান করেছেন জাকের।
আটে নেমে রিশাদ হোসেন ব্যাটে ঝড় তোলার আভাস দিয়েছিলেন। অক্ষর প্যাটেলকে পর পর দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে আড়াইশর ওপারে নেওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু হারশিত রানার স্লোয়ার বুঝতে না পেরে ক্যাচ দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে। ১২ বলে ১ চার ২ ছয়ে ১৮ রান করে ফিরেছেন রিশাদ। নয়ে নামা তানজিম হাসান সাকিব ৪ বল খেলে রান করতে পারেননি।
শেষ দিকে বাঁ-পায়ে ক্র্যাম্প হয় তাওহিদ হৃদয়ের। ব্যাটিংয়ের সময় বেশ কয়েকবার মাটিতে লুটিয়ে পরেছেন। ক্রিজে রানের জন্য দৌড়াতেও পারছিলেন না। তবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরি ঠিকই করেছেন হৃদয়। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে হৃদয়ের এটা প্রথম সেঞ্চুরি। সেটাও এলো ভারতের বিপক্ষে।
শেষ পর্যন্ত ৪৯.৪ ওভারে ২২৮ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন পেসার মোহাম্মদ শামি। ইনজুরির কারণে দীর্ঘ দিন বাইরে থাকা শামি ফিরেই চমকে দিলেন। তিন উইকেট পেয়েছেন হারশিত রানা। দুটি উইকেট পেয়েছেন অক্ষর প্যাটেল।
সারাবাংলা/এসএইচএস
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫
তাওহিদ হৃদয়
বাংলাদেশ-ভারত