শিক্ষক-সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
মঙ্গলবার ১৯ মার্চ দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এ প্রতিবাদ সমাবেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে প্রতিবাদে দাঁড়ান কর্মজীবী নারীদের ব্যানারে একটি সংগঠনও।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা বলেন, আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি যেখানে নারীর প্রতি অপরাধ ও অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠেও নারী শিক্ষার্থীরা আজ নিরাপদ নয়। যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মত অনেকেই বিষন্নতায় ভুগছে। তারা ও যে আত্মহননের পথ বেছে নিবে না তার কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না।
এসময় সংগঠনটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে ৯ শতাংশ শিক্ষক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘটিত যৌন নিপীড়নের ঘটনার সাথে জড়িত, বাকি ৯১ শতাংশ শিক্ষককে এসকল শিক্ষকের অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দৃঢ় আহ্বান জানান।

শিক্ষাঙ্গণকে রাজনৈতিক ছত্রছায়া থেকে মুক্ত করে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা দিতে হবে, নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজ গড়তে তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শিক্ষাঙ্গণকে নিরাপদ করে গড়ে তুলতে হবে।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ থাকলেও যদি তার মধ্যে শুভঙ্করের ফাঁকি থেকে যায় তাহলে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের হার ৫০:৫০ থাকার পরও সেখানে ক্রমাগত যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটতে থাকা কোনভাবেই কাম্য নয়। শিক্ষাঙ্গণে নিরাপদ পরিবেশ না থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করে এবং একই সাথে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের ও পরিপন্থী বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে আরও বক্তব্য রাখেন কর্মজীবী নারীর অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সানজিদা সুলতানা, এসিড সারভাইর্ভাস ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অর্ডিনেটর তাহমিনা ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহ-সাকিব এবং সংহতি প্রকাশ করেন প্রাগ্রসরের প্রতিনিধি।
সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, পাড়া কমিটির সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।