Last Updated:
সামান্য নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। বাবা সামান্য রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালান। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা সংসারে। সামান্য পান্তা ভাত খেয়েই দিন চলে বৃষ্টির। পুষ্টিকর খাবার সেই অর্থে জোটে না। সামান্য এক চিলতে মাটির বাড়িতেই থাকে সে।

বৃষ্টি সিং
পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রত্যন্ত গ্রামে ছোট্ট এক চিলতে এক মাটির বাড়িতেই বড় হয়ে উঠা। বাবা সামান্য দিনমজুরির কাজ করেন। বাড়িতে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা। খাবারে পুষ্টি কিংবা পুষ্টিকর খাবার সেই অর্থে জানেনা সে। তবুও ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে বড় হয়ে খেলোয়াড় হওয়ার, সেইমতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতা নিয়ে এবং তার বাবার একান্ত প্রচেষ্টায় নিজে থেকেই শিখছে খেলাধুলো। কখনও তার বাবা বাড়িতেই তৈরি করেছে লং জাম্প পিট আবার কখনও স্কুলে গিয়ে প্র্যাকটিস করে সে। বন্ধুদের অত্যন্ত প্রিয়, পর পর তিন বছর প্রাথমিক রাজ্য ক্রীড়াতে পুরস্কার জয় করেছে প্রত্যন্ত গ্রামে এক মেয়ে। তার এই পুরস্কার জয়ের হ্যাটট্রিককে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
এই সাফল্যে খুশি তার বন্ধু থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম সাঁতরাপুর এলাকার ছোট্ট মেয়ে বৃষ্টি সিং। বাবা বাবলু সামান্য দিনমজুরির কাজ করেন। বৃষ্টি বাড়ির পাশে সাঁতরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। প্রথমে চক্র, তারপর অঞ্চল, এরপর মহকুমা, জেলা এবং পরবর্তীতে রাজ্যে গিয়েও দাপটের সঙ্গে নিজের পারদর্শিতা দেখিয়ে একাধিক জেলার প্রতিযোগীদের হারিয়ে পুরস্কার জিতেছে সে। শুধু একবার নয়, পরপর তিন বছর রাজ্য ক্রীড়াতে পুরস্কার জয় করে হ্যাটট্রিক করেছে বৃষ্টি। ২০২৩, ২০২৪ এবং সম্প্রতি ২০২৫ এও সম্মানের সঙ্গে নিজের পারদর্শিতা দেখিয়েছে।
সামান্য নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার। বাবা সামান্য রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালান। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা সংসারে। সামান্য পান্তা ভাত খেয়েই দিন চলে বৃষ্টির। পুষ্টিকর খাবার সেই অর্থে জোটে না। সামান্য এক চিলতে মাটির বাড়িতেই থাকে সে। সেই বাড়ির মেয়ে বৃষ্টি। মেয়ের সাফল্যে খুশি পরিবারের সকলে। মেয়ের ইচ্ছেতেই সফলতার দিকে এগিয়ে দিতে চায় তার বাবা-মা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় খেলাধুলা চালিয়ে যাচ্ছে বৃষ্টি। কখনও আর্থিক কখনও মানসিক সাহায্য করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা। তবে টানা তিন বছর ধরে তার এই পারদর্শীতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
শুধু তাই নয়, রাজ্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দাপটের সঙ্গে কখনও উত্তরবঙ্গ আবার কখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছে সে। চলতি বছর রাজ্য ক্রীড়াতে ২০০ মিটার দৌড় এবং দীর্ঘ লম্ফনে নাম দিয়েছিল বৃষ্টি। তবে ২০০ মিটার দৌড় শুরু করার পরপরই তার পায়ে পেরেক ফুটে যায়। তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ২০০ মিটার দৌড় সম্পূর্ণ করতে না পারলেও ব্যথা পায়ে দীর্ঘ লম্ফন করে এত প্রতিযোগীর মধ্যে তৃতীয় হয়েছে বৃষ্টি। তার এই মনের জোর এবং চিন্তা ভাবনাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
রঞ্জন চন্দ
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
March 21, 2025 5:31 PM IST
Bangla News: ট্রেনের চাকায় লেগে মহিলার দেহাংশ, লেগে এক টুকরো ওড়নাও! নদিয়ার স্টেশনে কী মারাত্মক দৃশ্য