Last Updated:
২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারি এই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ আবেদনকারী মোটরসাইকেল চালক সেই সময় ২০ বছর বয়সি একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছিলেন৷

হাইওয়েতে গাড়ি চালাতে চালাতে কোনও রকম সঙ্কেত না দিয়ে আচমকা ব্রেক কষলে তা চালকের গাফিলতির হিসেবেই গণ্য করা হবে৷ একটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত মামলায় এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ ২০১৭ সালের ওই দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছিলেন এক মোটরসাইকেল চালক৷৷ গত ২৯ জুলাই এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ৷
২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারি এই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ আবেদনকারী মোটরসাইকেল চালক সেই সময় ২০ বছর বয়সি একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছিলেন৷ দুর্ঘটনায় কোমরের নীচ থেকে তাঁর বাঁ পা কেটে বাদ দিতে হয়৷ জানা গিয়েছে, হাইওয়ে দিয়ে পিছনে একজন সওয়ারিকে নিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তখন সামনে থাকা একটি গাড়ি আচমকাই ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ে৷
এর ফলে গাড়ির পিছনে মোটরসাইকেল ধাক্কা মেরে ছিটকে রাস্তায় পড়েন ওই মোটরসাইকেল চালক৷ পিছনে থাকা একটি বাস তাঁর পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়৷ প্রাথমিক ভাবে অ্যাক্সিডেন্টস ক্লেইম ট্রাইবুনাল ক্ষতিপূরণ বাবদ ৯১.৬২ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল৷ কিন্তু দুর্ঘটনার ২০ শতাংশ দায় ওই মোটরসাইকেল চালকের, এই যুক্তিতে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কমিয়ে ৭৩.২৯ লক্ষ টাকা করা হয়৷
এর পর মামলাটি মাদ্রাস হাইকোর্টে উঠলে আদালত দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশ দায় গাড়ির চালক, ৩০ শতাংশ দায় মোটরসাইকেল চালকের এবং ৩০ শতাংশ দায় বাস চালকের বলে জানায়৷ এর ফলে ওই মোটরসাইকেল চালকের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কমিয়ে ৫৮.৫৩ লক্ষ টাকা ধার্য করে মাদ্রাজ হাইকোর্ট৷
যদিও মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে উঠলে শীর্ষ আদালত জানায়, যথাযথ যুক্তি ছাড়াই মাদ্রাজ হাইকোর্ট আবেদনকারী মোটরসাইকেল চালকের ক্ষতিপূরণের অঙ্ক কমিয়েছে৷ বিচারপতিরা জানান, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর বমি পাওয়ার কারণেই আচমকা দ্রুত গতিতে থাকা গাড়ি থামিয়ে দেন চালক৷ কিন্তু ব্রেক কষার আগে কোনওরকমের সঙ্কেত অথবা ইন্ডিকেটর দেননি তিনি৷ শীর্ষ আদালত জানায়, হাইওয়েতে সব গাড়িই দ্রুত গতিতে চলে৷ ফলে কোনও গাড়ির যদি আচমকা থামার প্রয়োজন হয় তাহলে যথাযথ সঙ্কেত দেওয়ার দায়িত্ব সেই গাড়ির চালকেরই৷ যাতে পিছনে থাকা অন্যান্য গাড়ি সমস্যায় না পড়ে৷ এই সতর্কতা অবলম্বন না করার কারণেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় আদালত৷
শীর্ষ আদালত জানায় এই দুর্ঘটনার ৫০ শতাংশ দায় ওই গাড়ি চালকের৷ ৩০ শতাংশ দায় বাস চালকের এবং ২০ শতাংশ দায় মোটরসাইকেল চালকের৷ সেই অনুপাতে মোটরসাইকেল চালকের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৯১.৩৯ লক্ষ টাকা ধার্য করে আদালত৷ এর মধ্যে আদালতে আবেদন করার দিন থেকে ৭.৫ শতাংশ হারে সুদ ধরে নিয়ে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক চূড়ান্ত করে সুপ্রিম কোর্ট৷
দুর্ঘটনায় একটি পা বাদ যাওয়ায় আবেদনকারীর উপার্জন ক্ষমতা হারানো, দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া এবং তাঁর বৈবাহিক জীবনের সম্ভাবনাও নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়টি ধর্তব্যের মধ্যে নেয় শীর্ষ আদালত৷
Kolkata,West Bengal
July 31, 2025 11:52 AM IST