Last Updated:
South 24 Parganas News: পেটের তাগিদে জন্মভুমি ছেড়ে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ান এঁরা। মণিপুরে অশান্তির পরিবেশ প্রিয়জনের দুশ্চিন্তায় চোখে ঘুম নেই তবুও পেটের জ্বালা নেভাতে চোখের জলে দর্শকদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা এই মণিপুরের বাসিন্দাদের।
ব্যালেন্সের খেলা দেখাচ্ছেন মণিপুরের শিল্পী
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পেটের তাগিদে জন্মভুমি ছেড়ে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ান এঁরা। মণিপুরে অশান্তির পরিবেশ প্রিয়জনের দুশ্চিন্তায় চোখে ঘুম নেই তবুও পেটের জ্বালা নেভাতে চোখের জলে দর্শকদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা এই মণিপুরের বাসিন্দাদের। বারুইপুরের সার্কাসের নেই বাঘ, হাতি, জলহস্তি কিংবা পাখির খেলা। নেই বাড়ের খেলা তা সত্ত্বেও বারুইপুর রাস মাঠে দর্শকরা ভিড় জমাচ্ছেন মনিপুরের শিল্পীদের ব্যালেন্সে ও জাগলিং এর খেলা দেখতে। মনিপুরের শিল্পীরাই এবার বারুইপুরের রাস ময়দানের সার্কাসের প্রধান আকর্ষণ।
জ্বলন্ত মণিপুরে আত্মীয়-স্বজনদের কে ছেড়েই বারুইপুরের রাস মাঠে খেলা দেখাচ্ছেন মনিপুরের শিল্পীরা। শত কষ্ট, দুঃখ, বেদনা, ভয় ও আতঙ্ক থাকলেও হাসিমুখে তারা সার্কাসে আসা দর্শকদের মনোরঞ্জন করে চলেছেন। আর এই মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে থৌবালে রয়েছে রবিন সিং, মোহন দাস, রৌশনদের পরিবার-পরিজন। আর রবিনরা রয়েছে বারুইপুরে সার্কাসের তাঁবুতে। সার্কাসে চলছে তাঁদের খেলা।
কিন্তু এর ফাঁকেই উদ্বিগ্ন রবিন, রৌশনরা বারে বারে মোবাইলে দেখছেন দেশের কী পরিস্থিতি। খোঁজ নিচ্ছেন পরিবারের।এ প্রসঙ্গে এক শিল্পী বলেন, এখন পর্যন্ত থৌবালে কিছু হয়নি। স্বাভাবিক আছে এলাকা। কিন্তু কতদিন তা থাকবে জানি না। এই রবিন, মোহন সহ পুস্পা রানী এই রকম ১২ জন মণিপুরের যুবক-যুবতী এসেছেন রাসমাঠে সার্কাসে তাঁদের নানা আকর্ষণীয় খেলা দেখাতে। প্রতিদিন তিনটি করে শোয়ে চলে তাঁদের খেলা। এই সার্কাসের মূল আকর্ষণ এই মণিপুরিরা। সার্কাসে খেলা দেখাচ্ছেন বটে। কিন্তু তাদের মন পড়ে আছে বাড়িতে। তাঁরা বলেন, বাড়িতে বাবা-মা আছেন। তাঁদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত নিয়মিত কথা বলতে পারছি। কিন্তু পরবর্তীকালে জানি না পারবো কী না।
খুব চিন্তার মধ্যেই সার্কাসের খেলা দেখাতে হচ্ছে। রবিন সিং এর সহধর্মিণী পুষ্পারানি আছেন স্বামীর সঙ্গে। খেলা দেখানো শেষ হতেই তাঁবুতে ছুটছেন পরিবারের খোঁজ খবর নিতে। তিনি বলেন, এই রকম মণিপুরের পরিস্থিতি হবে আদৌ ভাবিনি। ইম্ফলেও অনেক আত্মীয় পরিজন আছেন। তাঁদের কোনও খবর নিতে পারছেন না। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ সেখানে। সার্কাসে দর্শকদের মনোরঞ্জন করছি বটে মন পড়ে আছে মণিপুরে। কিন্তু তারা এই পেশা ছেড়ে অন্য কোন কাজ করতে পারছেন না কারণ তারা অন্য কোন কাজ জানেন না। তবে নিজেদের আগামী প্রজন্মকে আর এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত করবেন না বলেই জানাচ্ছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা, অন্যান্য শিল্পীরা।
সুমন সাহা
Kolkata,West Bengal
November 28, 2024, 7:40 PM IST