Last Updated:
‘মিডনাইট হ্যামার’৷ রবিবার আমেরিকার মিসৌরি থেকে উড়ে গিয়ে ইরান ভূখণ্ডের ভিতরে ঢুকে সে দেশের তিনটি নিউক্লিয়ার ফেসিলিটিতে হামলা চালানোর অপারেশনকে এই নামই দিয়েছেন ‘ডন’ ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ কিন্তু, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক ভাবে ঠিক কতটা উপযুক্ত? এর জেরে কি চিন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার পশ্চিম বিরোধী শক্তিকে আরও এককাট্টা করে ফেললেন ট্রাম্প?

মস্কো: রাষ্ট্রপুঞ্জের কাউন্সিলের ডাকা বিশেষ বৈঠকে ইরানের হয়েই সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল তাদের ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র চিনকে৷ এবার এশিয়ার আরও এক শক্তিধর দেশ রাশিয়াও পাশে দাঁড়াল ইরানের৷ ক্রেমলিন সরকারি ভাবে জানিয়ে দিল ইরানকে সাহায্য করতে তারা প্রস্তুত৷ কিন্তু, পুতিনের রাশিয়ার কাছ থেকে ঠিক কী সাহায্য চায় ইরান? পুতিনই বা কতটা সাহায্য করতে ইচ্ছুক?
জানা গিয়েছে, সোমবার মস্কোয় বিশেষ বৈঠক করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি৷ রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা মধ্যস্থতার বার্তা দিয়েছি৷ আমরা আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়েছি৷ ইরানের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এটা আমাদের একটা জরুরি পদক্ষেপ৷ এরপর, ইরানের যা প্রয়োজন, যা ইরান চাইবে, তার উপর নির্ভর করবে রাশিয়া তাদের কী সাহায্য করবে৷’’
মস্কোয় ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ইরানের নিউক্লিয়ার সাইটে আমেরিকার হামলা চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন পুতিন৷ বলেন, ‘‘কোনও রকমের কোনও উস্কানি নয়, আমেরিকার ইরানের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন একেবারে মেনে নেওয়া যায় না৷ এর কোনও দোষ খণ্ডনের জায়গা নেই৷ আমরা ইরানের মানুষকে তাদের প্রয়োজন মতো সাহায্য রার চেষ্টা করব৷’’
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সার্বভৌমিত্ব রক্ষার্থে পুতিনের সমর্থনে তাঁকে ধন্যবাদ জানান তেহরানের প্রতিনিধি৷
তবে ইজরায়েল নিয়ে পুতিনের প্রতিক্রিয়া এদিন ছিল একেবারে বিপরীত৷ সেখানে ইরানকে সমর্থনের তেমন কোনও বার্তা ছিল না৷ সেন্ট পিটার্সবার্গে ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বললেন, ‘‘পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রাশিয়া ফেডারেশনের প্রায় ২০ লক্ষ লোক ইজরায়েলে বসবাস করেন। আজ এটা প্রায় রাশিয়াভাষী দেশে পরিণত হয়েছে। এবং নিঃসন্দেহে, রাশিয়ার সাম্প্রতিক ইতিহাসে আমরা এই বিষয়টা সবসময় দেখি।”
ইরানে আমেরিকার হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে ডাকা রাষ্ট্রপুঞ্জের কাউন্সিলের বৈঠকে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে চিন৷ রাষ্ট্রপুঞ্জে চিনের স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কঙ বলেছেন, ‘‘ইরানের সমস্ত নিউক্লিয়ার ফেসিলিটি IAEA-এর নজরাধীন৷ সেখানে এই ভাবে আমেরিকার হামলা চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে চিন৷’’
আমেরিকার হামলাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নীতি এবং আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী হিসাবেও মন্তব্য করেছেন চিনের প্রতিনিধি৷ ফু-এর দাবি, আমেরিকার এই হামলা আদতে ইরানের সার্বভৌমত্বের উপরে আঘাত৷ এই ঘটনা মধ্য প্রাচ্যের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে চিন৷ এমনকি, আমেরিকার এই কাজ পরমাণু শক্তিধর দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক শান্তি ও স্থিরতাকে নষ্ট করবে বলেও জানিয়েছে চিন৷ ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই কাজে ওয়াশিংটন তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে জানিয়েছে চিন৷ এমনকি, ১৯৭৯ এর পরে ইরানের পরমাণুকেন্দ্র এত বড় কোনও হামলা হয়নি বলেও মনে করিয়ে দিয়েছে বেজিং৷
‘মিডনাইট হ্যামার’৷ রবিবার আমেরিকার মিসৌরি থেকে উড়ে গিয়ে ইরান ভূখণ্ডের ভিতরে ঢুকে সে দেশের তিনটি নিউক্লিয়ার ফেসিলিটিতে হামলা চালানোর অপারেশনকে এই নামই দিয়েছেন ‘ডন’ ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ কিন্তু, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কূটনৈতিক ভাবে ঠিক কতটা উপযুক্ত? এর জেরে কি চিন-রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার পশ্চিম বিরোধী শক্তিকে আরও এককাট্টা করে ফেললেন ট্রাম্প?
June 24, 2025 12:13 AM IST