Last Updated:
Jhargram News: অনুমান, খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢোকে হাতিটি। একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি একাধিক মানুষ এবং গবাদি পশুর উপর আক্রমণ করে।

হাতির হামলা চালানোর প্রতীকী ছবি
ঝাড়গ্রাম: সাঁকরাইলের আন্ধারিয়া গ্রামে ফের দলছুট দাঁতাল হাতির তাণ্ডব। দলছুট হাতি ঢুকে পড়ায় গ্রামের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। দাঁতালের তাণ্ডবে আহত ৪ গ্রামবাসী, মৃত্যু গবাদি পশুরও, উত্তেজিত গ্রামবাসীর হাতে আহত হুলা পার্টির সদস্য। প্রাথমিক ভাবে অনুমান খাবারের সন্ধানে গ্রামে ঢোকে হাতিটি। একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি একাধিক মানুষ এবং গবাদি পশুর উপর আক্রমণ করে। জানা গিয়েছে, আন্ধারিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেফালি মাইতি বাড়ির উঠোনে কাজ করছিলেন, সেই সময় হাতিটি হঠাৎ তাঁকে আক্রমণ করে। গুরুতর আহত হন তিনি। স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে স্বামী গোষ্ঠ মাইতিও হাতির আক্রমণে জখম হন। দু’জনকেই স্থানীয়রা দ্রুত ভাঙ্গাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শেফালি দেবীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঝাঁড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
সন্ধ্যায় হাতিটি গোকুলপুর গ্রামের দিকে এগোলে বনদফতরের ‘হুলা পার্টি’ হাতিটিকে অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করে। অভিযোগ, সেই সময় গ্রামের কিছু উত্তেজিত বাসিন্দা এক হুলা পার্টির সদস্য মজনু ভক্তার উপর হামলা চালায়। তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লাগে। বনদফতরের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে ভাঙ্গাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বিরডাহি এলাকায়। সাইকেলে করে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৭৩ বছর বয়সি উৎপল জানা হাতির মুখোমুখি হন। হাতিটি শুঁড়ে তুলে মাটিতে আছাড় মারে উৎপলবাবুকে এবং তাঁর সাইকেলটিও ভেঙে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ভাঙ্গাগড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে সেখান থেকে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে রেফার করা হয়। আহত উৎপল বাবুর ছেলে মানস জানা বলেন, “বাবা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় হাতি বাবার দিকে তেড়ে আসে। শুঁড় দিয়ে আক্রমণ করে এবং বাবা আহত হয়।”
অপর একটি ঘটনা ঘটে দক্ষিণদাঁড়িয়া এবং হরিপুরা গ্রামের মাঝামাঝি এলাকায়, যেখানে হাতির সামনে পড়ে শ্যামাপদ প্রধান নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। হাতিটি তাঁর পায়ের উপর দিয়ে পিষে দেয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁকেও তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই তাণ্ডবের ফলে এলাকার কয়েকটি গবাদি পশুও মারা গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। সাঁকরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি হাতি। খাবারের সন্ধানে তারা বিভিন্ন সময় লোকালয়ে চলে আসছে এমনটাই অভিযোগ। আর লোকালয়ে এলে প্রতিনিয়ত হামলার ঘটনা ঘটছে।
বনদফতরের পক্ষ থেকে সারাদিন ধরে হাতিটিকে সরানোর চেষ্টা চললেও নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় তাকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে বনদফতরও হুলা পার্টির সদস্যরা এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে সাঁকরাইল থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। গ্রামে এখন চরম আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।বারডাঙ্গা বিট অফিসার মিন্টু চক্রবর্তী জানান ডুলুং নদী অতিরিক্ত জল থাকার জন্য হাতি বের হতে চায় না, উত্তেজিত গ্রামবাসী হাতিকে উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি আমাদের এক কর্মীকেও আহত করে। তাকে নিয়ে আসা হয়েছে হাসপাতালে।’
তন্ময় নন্দী
Kolkata,West Bengal
June 21, 2025 4:46 PM IST