Last Updated:
নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আমল থেকে এই পুজোর উৎপত্তি বলে সকলেই জানেন! দেখুন সেই পুজো।
কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির রাজরাজেশ্বরী মাতা
কৃষ্ণনগর: চিরাচরিত ঐতিহ্য মেনে আজও সাড়ম্বরে পূজিত হন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বাড়ির মা জগদ্ধাত্রী। রাজ্যপাটের দিন কবে শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু রয়ে গিয়েছে সেই পরম্পরা, সেই রীতিনীতি। রাজবাড়ীর জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে আজও অন্যরকম উন্মাদনা থাকে কৃষ্ণনগরবাসীর। রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী তামসিক রূপে পূজিত হন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর একটি ইতিহাসও রয়েছে।
জানা যায়, ১৭৫৪ সালে কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে কর বাবদ এক লাখ টাকা রাজকোষে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন নবাব আলিবর্দি খাঁ। কিন্তু নবাবের হুকুম মতো সেই টাকা দিতে পারেননি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁকে বন্দি করেছিলেন নবাব। কিন্তু দশমীর দিন সেই টাকা নবাবকে দিয়ে নিস্তার পেয়েছিলেন এবং কারাগার মুক্ত হয়েছিলেন। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে জলপথে নৌকো করে ফিরছিলেন।
ফেরার পথে মনমরা অবস্থায় ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। নৌকোতেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং দেবীর জগদ্ধাত্রী স্বপ্নাদেশ দেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রকে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে স্বপ্নাদেশ দেন কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে তাঁকে কুমারী রূপে পুজো করতে। আর সেই থেকেই কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে চতুর্ভুজ নারীরূপে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয়। এরপর থেকে শুরু হয় গোটা কৃষ্ণনগর জুড়ে জগদ্ধাত্রী পুজো।
কৃষ্ণনগরের এই জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন রকম মত পোষণ করেন। তবে নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের আমল থেকে এই পুজোর উৎপত্তি বলে সকলেই জানেন। তাই আজও রীতি ও প্রথা অনুযায়ী কৃষ্ণনগরের সমগ্র বারোয়ারী পুজো উদ্যোক্তারা তাঁদের প্রতিমা নিয়ে রাজবাড়ী স্পর্শ করে তারপরেই জলঙ্গী নদীতে বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এও কথিত আছে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দরবার থেকেই কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় পুরস্কার ও ঘোষিত হয়েছিল। আজ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র নেই। তবুও তাঁর স্মৃতি বিজড়িত সেই রাজপ্রাসাদের রাজ দালানে আজও পূজিত হয়ে আসছেন জগদ্ধাত্রী দেবী।
মৈনাক দেবনাথ
Kolkata,West Bengal
November 10, 2024, 5:07 PM IST