Last Updated:
পরাধীন ভারতবর্ষে তিনি আয়ুর্বেদ নিয়ে পড়াশোনা করেন। হয়েছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। তবে তখনই তিনি জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। স্বাধীনতা আন্দোলনে থাকার কারণে কারাবাস হয় তার।

বিপ্লবী
পশ্চিম মেদিনীপুর: তখন পরাধীন ভারতবর্ষ। পড়াশোনা করেছেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিয়ে।অবিভক্ত মেদিনীপুরে জন্ম তাঁর। তবুও বিভিন্ন সময়ে আর্ত পীড়িত মানুষদের সেবায় তিনি বারবার নিয়োজিত হতেন। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক হয়েও প্রশান্ত কুমার গিরি- তিনি পরাধীন ভারতের গ্লানি মোচনের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। দেশকে স্বাধীন করতে এগিয়ে এসেছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে। ঘরের লোক জানতেনই না তার বিপ্লবী কর্মকান্ডের কথা। পড়াশোনা করে যখন তার চাকরি করার কথা তখন স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে দু’বার জেলও খেটেছেন। পেশাগতভাবে তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হলেও দেশকে বাঁচানোর জন্য তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার এমন মানুষের আত্মত্যাগ ও জীবনের কাহিনী অবাক করবে। সবার অলক্ষে চিকিৎসক থেকে হয়ে উঠলেন বিপ্লবী৷ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে জেল হয় তাঁর।
পূর্ব মেদিনীপুরে জন্ম হলেও তিনি জেলবন্দী অবস্থা কাটার পর চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বাংলা ওড়িশা সীমানা এলাকার দাঁতনে। সেখানে ইংরেজ হঠাতে স্বাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি আর্ত-পীড়িত মানুষদের সেবা করতেন। মানুষের আপদে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। মহামারী হোক কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে যেতেন তিনি। দাঁতনে কংগ্রেসের দল প্রতিষ্ঠা লগ্নে নেতৃত্ব দিয়েছেন। পড়াশোনা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিয়ে হলেও গ্রামীণ এলাকার মানুষদের সেবা করতেন তিনি। তবে আড়ালে চলত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই।
ইতিহাস ঘাঁটলে সীমানা বাংলা এলাকায় যে ক’জন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম প্রসন্নকুমার গিরি। যার জন্মের সাল পাওয়া না গেলেও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তার জন্ম পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নস্করপুর গ্রামে। তৎকালীন পরাধীন ভারতবর্ষে তিনি আয়ুর্বেদ নিয়ে পড়াশোনা করেন। হয়েছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক। তবে তখনই তিনি জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। স্বাধীনতা আন্দোলনে থাকার কারণে কারাবাস হয় তার। জেলবন্দী অবস্থায় পরিচয় হয় অপর স্বাধীনতা সংগ্রামী চারুচন্দ্র মহান্তির সঙ্গে। এরপর তিনি চলে আসেন দাঁতনে।
দাঁতনে এসে প্রান্তিক গ্রামীণ এলাকায় মানুষদের সেবা শুশ্রূষার পাশাপাশি কংগ্রেসকে ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কয়েকজন মিলে দাঁতনে কংগ্রেস দল প্রতিষ্ঠা করেন।স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়ে দুবার জেল খেটেছেন। দাঁতনে তৃণমূল স্তরে কংগ্রেস সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি ১৯২১ সালে দাঁতন থানার কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হন।
তিনি ১৯৪৩ সালে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং বিনামূল্যে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে সক্রিয় ভূমিকা নেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সক্রিয় রাজনীতিও করেছেন। শুধু তাই নয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশ নিয়ে দু’বার জেল খেটেছেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান দাঁতন লাইব্রেরী গড়ে তোলার পিছনে বেশ ভূমিকা ছিল তাঁর। ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে স্বাধীনতা সংগ্রামীর মর্যাদাও পেয়েছিলেন। এখনও তার বাড়িতে তার উত্তর পুরুষেরা বিভিন্ন ধরনের দরকারি কাগজপত্র, বিপ্লবী প্রসন্ন গিরির বিভিন্ন ইতিহাসকে গুছিয়ে রেখেছেন। তবে স্বাধীনতা আন্দোলনে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
Ranjan Chanda
Kolkata,West Bengal
August 04, 2025 11:48 PM IST
Independence Day Freedom Fighter: আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা, যোগ দেন স্বাধীনতা আন্দোলনে, মানুষের কাছে থেকে মানুষের জন্য লড়তেন