Hooghly News: বজ্রপাত থেকে কৃষকদের বাঁচাতে যা করে চলেছেন এই শিক্ষক…, জানলে ‘থ’ হবেন

Hooghly News: বজ্রপাত থেকে কৃষকদের বাঁচাতে যা করে চলেছেন এই শিক্ষক…, জানলে ‘থ’ হবেন

Last Updated:

Hooghly News: গ্রামের মানুষকে বজ্রাঘাত থেকে রক্ষা করতে তালগাছ বসিয়ে চলেছেন পান্ডুয়ার ভূগোলের শিক্ষক। শুধু তালগাছ নয়, সব ধরনের গাছকেই পরিবেশের সবথেকে বড় বন্ধু মনে করেন শিক্ষক। তাই ছাত্রদের নিয়ে সেই বন্ধুদের রক্ষা করেন।

X

Hooghly News: বজ্রপাত থেকে কৃষকদের বাঁচাতে যা করে চলেছেন এই শিক্ষক…, জানলে ‘থ’ হবেন

গাছ লাগাচ্ছে শিক্ষক ভাস্কর মন্ডল।

হুগলি: রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে’। সেই তালগাছ বসানোর নেশা পেয়ে বসেছে পান্ডুয়ার শিক্ষক ভাস্কর মন্ডলকে। ইতিমধ্যে ৭৫ হাজার তালগাছ লাগানো হয়ে গেছে। এরপর বাঁকুড়ার জয়পুর জঙ্গলে তালগাছ বসানোর পরিকল্পনা করেছেন। গ্রামের মানুষকে বজ্রাঘাত থেকে রক্ষা করতে তালগাছ বসিয়ে চলেছেন পান্ডুয়ার ভূগোলের শিক্ষক। শুধু তালগাছ নয়, সব ধরনের গাছকেই পরিবেশের সবথেকে বড় বন্ধু মনে করেন শিক্ষক। তাই ছাত্রদের নিয়ে সেই বন্ধুদের রক্ষা করেন।

কাজের মাঝে যখনই সময় পান তখনই ফাঁকা জায়গায় স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন পান্ডুয়ার রানাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভাস্কর মন্ডল। তিনি ভূগোলের শিক্ষক। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় তার আদিবাড়ি হলেও প্রায় ৩২ বছর আগে হুগলির পান্ডুয়ার উত্তরায়ন এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি মনে করেন গাছ হল প্রকৃত ‘বন্ধু’। তাই বন্ধুকে ত্যাগ করা যাবে না‌। যত বন্ধুত্ব বাড়বে ততই আমরা ভাল থাকব। তাই তার কাছে গাছ লাগানো নেশা।

প্রায় ২২ বছর ধরে পান্ডুয়ার বিভিন্ন এলাকায় গাছ লাগিয়ে আসছেন ভাস্কর বাবু। তবে তার মধ্যে অধিকাংশই তালগাছ। প্রতিবছর জুন থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে তিনি তাল-সহ বট, অশ্বত্থ, খেজুর ,বেল, তেঁতুল, আম বিভিন্ন গাছ বসিয়ে থাকেন। পান্ডুয়া ব্লকের অধিকাংশ এলাকা কৃষি প্রধান। পান্ডুয়ার আত্তি মোর থেকে রানাগড় যাবার পথে সবুজে ঘেরা প্রচুর গাছ লক্ষ্য করা যায়। তার মধ্যে অধিকাংশই রয়েছে ছোট-বড় তালগাছ। স্থানীয়দের দাবি সেই সমস্ত তালগাছ বসিয়েছেন ভাস্কর বাবু। তীব্র দাবদহে মানুষ যখন একটু বিশ্রামের আশ্রয় খোঁজে তখনই ছায়া শীতল পরিবেশে তাল গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেন অনেক পথ চলতি মানুষ। ওই রাস্তার দু-পাশেই রয়েছে প্রচুর চাষযোগ্য জমি। কৃষকরাও গাছের ছায়ায় এসে আশ্রয় নেন । প্রায় শতাধিক তালগাছ রয়েছে রাস্তার দু’পাশে। তাল গাছের পাশাপাশি তিনি বিহার থেকে মাখনা গাছ এনে জলাশয়ে বসিয়েছিলেন সেই গাছও এখন বড় হয়েছে । মাখনা একটি লাভজনক চাষ চাষীদের তিনি অনুরোধ করেন এই চাষ করার জন্য।

প্রধান শিক্ষককে সাহায্য করে তার স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা। প্রায় ২০০ জন পড়ুয়াদের নিয়ে ‘নেচারস লাভার ক্লাব’ নামে একটি সংগঠন করেছেন ভাস্কর বাবু। বিদ্যালয়ের ভিতরের চারপাশ গাছ গাছালিতে ভরা। গ্রামে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাল আটি সংগ্রহ করার জন্য পিকআপ সেন্টার তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষক। কেউ ফোন করে জানালেই তার বাড়িতে হাজির হয়ে যান শিক্ষক-সহ পড়ুয়ারা । সেখান থেকে তারা তাল আটি সংগ্রহ করে বিভিন্ন জায়গায় বসান। ইতিমধ্যেই প্রায় ৭৫ হাজার তালগাছ বসিয়েছেন বলে দাবি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের। অনেক গাছ রক্ষা করা যায় না। তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। পরিবেশ রক্ষায় লাগিয়ে চলেছেন গাছ। শিক্ষকের পরিবারও তাকে এই কাজে সাহায্য করে।

রাহী হালদার

Scroll to Top