East Bardhaman News: লর্ড কার্জনের মন জয় থেকে GI ট্যাগ, সীতাভোগ-মিহিদানার ইতিহাস জানলে গর্বে বুক ফুলবে আপনারও

East Bardhaman News: লর্ড কার্জনের মন জয় থেকে GI ট্যাগ, সীতাভোগ-মিহিদানার ইতিহাস জানলে গর্বে বুক ফুলবে আপনারও

Last Updated:

East Bardhaman News: আপনি কি জানেন আপনার জেলাতেই রয়েছে এমন এক মিষ্টি যে মিষ্টি এক সময় মন জয় করে নিয়েছিল তৎকালীন বাংলার বড়লাট লর্ড কার্জনের। ২০১৭ সালে জিআই ট্যাগও পায় এই মিষ্টি। 

+

East Bardhaman News: লর্ড কার্জনের মন জয় থেকে GI ট্যাগ, সীতাভোগ-মিহিদানার ইতিহাস জানলে গর্বে বুক ফুলবে আপনারও

মিষ্টির ছবি

বর্ধমান: আপনি কি জানেন আপনার জেলাতেই রয়েছে এমন এক মিষ্টি যে মিষ্টি এক সময় মন জয় করে নিয়েছিল তৎকালীন বাংলার বড়লাট লর্ড কার্জনের। ২০১৭ সালে জিআই ট্যাগও পায় এই মিষ্টি। ভাবছেন তো? কোন মিষ্টির কথা বলছি। আমাদের প্রায় সকলেরই অত্যন্ত পছন্দের। বর্ধমানের নাম উঠলেই প্রথম যে দুটি নাম মনে পড়ে তা হল সীতাভোগ ও মিহিদানা। তবে বর্তমানে সীতাভোগ ও মিহিদানা শুধুমাত্র বর্ধমানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, জিআই ট্যাগ পাওয়ায় জেলা থেকে রাজ্য এমনকি ভিনদেশেও পাড়ি দিচ্ছে বর্ধমানের সুস্বাদু এই দুই মিষ্টি। আপনি কি জানেন প্রথম এই মিষ্টি কখন তৈরি হয়েছিল বর্ধমানে? আর কেনই বা তৈরি করা হয়েছিল?

১৯০৪ সালে বর্ধমানের মহারাজা বিজয়চাঁদ মেহতাবের আমন্ত্রণে বাংলার তৎকালীন বড়লাট লর্ড কার্জন আসেন বর্ধমানের। তার আগমনের খুশিতে নতুন করে সেজে ওঠে বর্ধমান। একদিকে যেমন তাকে স্বাগত জানাতে তৈরি করা হয় কার্জন গেট, কার্পেট বিছানো হয় শহর জুড়ে তেমনি জনৈক মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগকে নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করার জন্য বলেন মহারাজ। তবে সম্ভবত বর্ধমানে এই মিষ্টি প্রথম তৈরি নয় বলে জানান ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ। তিনি বলেন, বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য সীতাভোগ ও মিহিদানার উল্লেখ পাওয়া যায় কিন্তু বর্ধমানের এই মিষ্টি সর্বপ্রথম তৈরি করেন ভৈরবচন্দ্র নাগ।

জানা যায়, ভৈরবচন্দ্র নাগের আদি বাড়ি ছিল পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে। নাগেরা ছিলেন রাজাদের খাস মিষ্টি প্রস্তুতকারক। রাজার আমন্ত্রণে ভৈরবচন্দ্রের দাদু শ্রীনাথ নাগ পরিবারের লোকজনকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন বর্ধমান। শ্রীনাথের ছেলে ক্ষেত্রনাথ বর্ধমানের রাজা মহতাব চাঁদের আমলে সীতাভোগ ও মিহিদানা প্রস্তুতির আদি পর্ব সেরে ছিলেন। কিন্তু তার তৈরি সীতাভোগ ও মিহিদানা ছিল পান্তুয়া ও বোঁদের আকারে। ভৈরবচন্দ্র নাথ বানিয়েছিলেন এই দুই-টির সূক্ষ্ম রূপ। আজ যে আকারে আমরা সীতাভোগ আর মিহিদানাকে দেখি, তা তারই সৃষ্টি । কথিত আছে যে লর্ড কার্জন সীতাভোগ ও মিহিদানা খেয়ে খুবই খুশি হন।

রসগোল্লার মালিকানা নিয়ে বহুদিন ধরেই বাংলা এবং ওড়িশার মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চললেও কিন্তু বর্ধমানকে সীতাভোগ এবং মিহিদানার জন্য ২০১৭ সালে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন শংসাপত্র দেওয়া হয় অর্থাৎ সরকারিভাবে সীতাভোগ-মিহিদানা বর্ধমানেরই।তবে ‘সীতাভোগ’ নামটি নিয়ে বেশ দ্বন্দ্ব আছে পণ্ডিতমহলে। সুকুমার সেনের মতে, বানানটি হওয়া উচিত ‘সিতাভোগ’, ‘সিতা’ অর্থে সাদা। আবার ‘সিতা’-র মানে মিছরিও হয়, তাই সাদা রঙের মিছরির মতন যে মিষ্টি বর্ধমান রাজবাড়ির হালুইকররা বানালেন, তার নাম হয়ে গেল ‘সীতাভোগ’।

সায়নী সরকার

Scroll to Top