Last Updated:
East Bardhaman News: আদালত নয়, এবার বিচারকদের বিদ্যালয়ে দেখা গেল একেবারে অন্যরকম ভূমিকায়। তাড়া স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের বোঝালেন বিভিন্ন আইন সংক্রান্ত বিষয়।

বিদ্যালয়ে বিচারক
পূর্ব বর্ধমান: আদালত নয়, এবার বিচারকদের বিদ্যালয়ে দেখা গেল একেবারে অন্যরকম ভূমিকায়। কোর্টরুম ছেড়ে সময় কাটালেন ক্লাসরুমে। তবে হয়ত ভাবছেন যে বিদ্যালয়ে বিচারক কেন? আসলে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ষোরশীবালা বালিকা বিদ্যামন্দির বিদ্যালয়ে আয়োজিত হয়েছিল মেয়েদের সচেতনতামূলক একটি বিশেষ আলোচনাসভা। আর সেই আলোচনা সভাতেই উপস্থিত হয়েছিলেন হুগলি জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব তথা সহকারী দায়রা বিচারক মানালি সামন্ত এবং চন্দননগর আদালতের বিচারক শ্রী অভিষেক মান্না। দীর্ঘক্ষণ ছাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বিচারকরা। এছাড়াও ছোটখাটো একাধিক বিষয়ে তাদের সচেতনও করা হয়। বিচারক মানালি সামন্ত বলেন, “এখানে আসার উদ্দেশ্য একটাই, মেয়েদের নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার বার্তা দিলাম এবং ১৮ বছরের আগে বিয়ে করতে নিষেধ করলাম। বিয়ের আগে প্রয়োজন নিজের পায়ে দাঁড়ানো এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়া। এরকমই কিছু কথা বলার জন্য ছাত্রীদের সঙ্গে আমার সময় কাটানো।”
মানালি সামন্তের কথায়, বর্তমান সমাজে বিপদ কোন দিক থেকে কীভাবে আসবে বলা মুশকিল। সেই কারণে পড়ুয়াদের কিছু হেল্পলাইন নম্বর জেনে রাখা প্রয়োজন যেগুলো তারা বিপদে পড়লে ব্যবহার করতে পারে। যেমন সুপ্রিম কোর্টের বডি আছে নালসা (ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি ), নালসার হেল্প লাইন নম্বর ১৫১০০ এই নম্বরটিতে ফোন করলে যে কোন বিপদ বা সমস্যা হলে আইনের সাহায্য দেওয়া থেকে শুরু করে কি করতে হবে, কোথায় যেতে হবে এই বিষয়গুলো বলে দেওয়া হয়। সাইবার ক্রাইম নিয়ে যদি কিছু বলার থাকে তাহলে ১৯৩০ নম্বরে ফোন করা যেতে পারে। চাইল্ড হেল্পলাইন নম্বর ১০৯৮ তো আছেই। এছাড়াও রয়েছে ডালসা (ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটি), এটা প্রত্যেকটা জেলায় রয়েছে।
বাচ্চারা কোনরকম যৌন হেনস্থার শিকার হলে যদি লজ্জায় কাউকে বলতে না পারে তাহলে তারা এই দফতরে যোগাযোগ করতে পারে। এই দফতরের কাজই হচ্ছে বিচার পাইয়ে দেওয়া। এইধরনের আরও একাধিক বিষয় নিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করেন বিচারকরা। পড়ুয়াদের মধ্যেও এক বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়, তারাও বিচারকদের কাছে পেয়ে জেনে নিয়েছে একাধিক প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তর। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গার্গী সামন্ত বলেন, “আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে অভিভাবক এবং পড়ুয়ারা শুনলে উপকৃত হবে এবং অনুপ্রাণিত হবে। ভবিষ্যতে তারা যাতে ভুল পথে না যায় সেই আশা রাখছি। এই আশা রেখেই স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই আয়োজন করা হয়েছিল।”
শুক্রবার ছিল বিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত বিচারক দ্বয়ের একমাত্র পুত্র অরিঞ্জয়ের জন্মদিন, এই উপলক্ষে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে তারা দিনটি উদযাপন করেন এবং সকল ছাত্রীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। সবমিলিয়ে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের ষোরশীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা পেল একেবারে এক নতুন শিক্ষা।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী
Kolkata [Calcutta],Kolkata,West Bengal
June 14, 2025 7:07 PM IST