ঘটনাটি কীভাবে ঘটে? নীলকমল নামের একটি ফেরি গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া থেকে জনপ্রিয় পর্যটন স্থল এলিফ্যান্টা দ্বীপের দিকে যাচ্ছিল। বিকেল ৪টার দিকে একটি ছোট নৌকা দ্রুতগতিতে এসে এই ফেরিটির সঙ্গে ধাক্কা খায়, বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘আমার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে’, তীব্র বিতর্কের মাঝেই কংগ্রেসকে আক্রমণ অমিত শাহ-এর
সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা অফিসিয়ালরা জানিয়েছেন, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড বিশাল উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে ১১টি নৌবাহিনীর নৌকা, মেরিন পুলিশের তিনটি নৌকা এবং কোস্ট গার্ডের একটি নৌকা মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি চারটি হেলিকপ্টার উদ্ধার কাজে যুক্ত রয়েছে। তবে এতকিছুর পরও প্রায় ১২ জন এখনও নিখোঁজ। পুলিশ, জওহরলাল নেহরু পোর্ট অথরিটি এবং স্থানীয় মৎস্যজীবীরাও উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, একটি দ্রুতগামী নৌকা যাত্রীবাহী ফেরির চারপাশে চক্কর কাটছিল এবং সেটিই ধাক্কা মারে। ফেরিটি বিকেল ৩:৩০ নাগাদ গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া থেকে রওনা হয় এবং এলিফ্যান্টার পথে প্রায় ৫ থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ফেলেছিল, ঠিক তখনই হয় ঘটনাটি।
আরও পড়ুন: জামিনের জন্য তিন মাসের শিশুকে বিক্রি মহিলার! বড় পাচার চক্রের খোঁজ পুলিশের
এক যাত্রী বলছিলেন, “আমি ফেরিতে বিকেল ৩:৩০ নাগাদ উঠেছিলাম। প্রায় ১০ কিলোমিটার সমুদ্রে যাওয়ার পর, একটি দ্রুতগামী নৌকা আমাদের ফেরিতে ধাক্কা মারে। জল ঢুকতে শুরু করায় ফেরির চালক আমাদের লাইফ জ্যাকেট পরার নির্দেশ দেন। আমি কোনওভাবে লাইফ জ্যাকেট পরি, কিন্তু ততক্ষণে নৌকাটি ডুবে যায়। আমি প্রায় ১৫ মিনিট সাঁতার কাটি। তারপর একটি উদ্ধারকারী নৌকা এসে আমাকে উদ্ধার করে।”
তিনি আরও জানান যে ফেরিতে শিশু ছিল এবং জল ঢোকার পরই লাইফ জ্যাকেট বিতরণ করা হয়। ধাক্কা মারা নৌকায় প্রায় ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী ছিল, যার মধ্যে একজনের পা ভেঙে যায় এবং অপর একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস জানিয়েছেন, তিনি জেলা প্রশাসনকে সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমরা নীলকমল ফেরি দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি, যা এলিফ্যান্টার দিকে যাচ্ছিল। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, পোর্ট ও পুলিশের নৌকা তৎক্ষণাৎ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। ভাগ্যক্রমে বেশিরভাগ যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে উদ্ধার কাজ এখনও চলছে। আমি জেলা প্রশাসনকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছি।”
রাজ্য বিধানসভায় ফড়নবীস ঘটনার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন শিব সেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর বিরোধী নেতা সচিন আহির এই ঘটনাকে দুঃখজনক ট্র্যাজেডি হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “এটি প্রথমবার নয় যে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের তদন্ত করতে হবে যে ফেরিটি ওভারলোডেড ছিল কি না, এবং মেরিটাইম বোর্ড সঠিকভাবে এর পরিদর্শন করেছিল কি না।”
Kolkata,West Bengal
December 18, 2024 8:00 PM IST