Last Updated:
গনেশ চতুর্থীর দিন বাঁকুড়া মোদক সমাজের প্রতিটি মানুষ পুঁটি মাছ খেয়ে, এক বিরাট বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রার আগে
বাঁকুড়া: রীতি অনুযায়ী মিষ্টি দোকান বন্ধ থাকত গণেশ পুজোর দিন। গনেশ চতুর্থীর দিন বাঁকুড়া মোদক সমাজের প্রতিটি মানুষ পুঁটি মাছ খেয়ে, এক বিরাট বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। সঙ্গে এই দিন বন্ধ থাকে মিষ্টি তৈরি, “থাকে” বলা ভুল হবে কারণ মানুষের আর্থিক চাহিদার সামনে, বর্তমান সমাজের মুদ্রাস্ফীতির দিকে তাকিয়ে গণেশ পুজোর দিনও কিছু মিষ্টির দোকান খোলা রয়েছে বলে দেখা গেল।
তবে মূল আকর্ষণটা অন্য জায়গায়, ১৫ কিলো গুড় মাথায় করে কখনও ঘুরেছেন ? শীত কালে পিঠে খাওয়াই হোক বা শুধু মুখে খাওয়া , গুড় সকলেরই প্রিয়। সেই লোভনীয় গুড় মাথায় করেই গোটা শহর ঘুরছে বাঁকুড়া মোদক সমাজ। জেনে নেওয়া যাক, মোদক সমাজের গণেশ চতুর্থীর দিনে বিশেষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার কথা। রীতি মেনে প্রত্যেকে একটি করে পুঁটি মাছ খেয়ে, রবিবার অংশগ্রহণ করলেন এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায়।
মোদক সমাজ (ষোলোআনা ), অর্থাৎ বাঁকুড়া শহরের মিষ্টি প্রস্তুতকারকদের মানুষের একতা। বাঁকুড়া শহরের নুনগোলা রোড গণেশ মন্দিরের স্থাপনা থেকে পরিচর্যা পুরোটাই মোদক সমাজের মানুষেরা করেন। প্রায় ৩২০ থেকে ৩৩০ বছরের পুরানো মন্দির। রয়েছে বহু আধ্যাত্মিক ইতিহাস। মন্দিরে গণপতির আশীর্বাদ পেতেও আসেন বহু মানুষজন।
শোনা যায় বাবার শরণাপন্ন যে হয়েছে সে খালি হাতে কোনওদিন ফেরেনি। এবং মন্দির চত্বরে বেলাগাম ঘোরাফেরা করে ইঁদুর। সেই কারণে গনেশ পুজোর দিন হয় বিশেষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। যদিও শোভাযাত্রার দিন মিষ্টি প্রোডাকশন বন্ধ রাখে মোদক সমাজ। তবে এই বছর চিত্রটা একটু অন্যরকম। যারা কারিগর রয়েছেন তাদের কথা ভেবে খোলা রয়েছে কিছু মিষ্টির দোকান।
চতুর্থীর আগের দিন থেকেই শুরু হয় তোড়জোড়। আলোক সজ্জা এবং গণেশের বিগ্রহকে স্নান করানো। পরের দিন সকাল হলেই জীবন্ত মা দুর্গা , ভোলানাথ ও গণেশকে সঙ্গে নিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এক বিশাল ছাতার নীচে মাথায় করে নিয়ে যাওয়া হয় বাবার রুপোর ঘট আর তাতে থাকে ১৫ কিলো গুড়।
এই পরম্পরা মেনেই এবছরও নুনগোলারোড থেকে মাচানতলা, পোদ্দারপাড়া, শাঁখারীপাড়া ইন্দারাগোড়া ,লালবাজার মোড় হয়ে রাণিগঞ্জমোড় রাসতলা হয়ে নুনগোলারোড মন্দিরে আবারও প্রবেশ করবে সেই গুড় ভর্তি ঘট।
দশ দিন রাখা থাকে সেই গুড়। পরেটা বাবার ভোগ এবং নানা কাজে প্রসাদ রূপে ব্যবহৃত হয়। বাঁকুড়া জেলার মানুষের কাছে গুড় একটা ভালবাসা আর তার সঙ্গে বাঁকুড়া মোদক সমাজের অন্যরকম গণেশ চতুর্থী শোভাযাত্রা এক অনন্য ক্যানভাস যার জন্য প্রতি বছর অপেক্ষা করে থাকেন বাঁকুড়া শহরের বহু মানুষ।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী
Kolkata,West Bengal
February 02, 2025 6:37 PM IST
Birbhum News: অভিনব অন্নপ্রাশন! বাংলার এপার-ওপার ‘মিলে গেল’ একরত্তির মুখেভাতে