বাসচাপায় ডিবির ওসি নিহত, অগ্রিম মরনোত্তর দেহ দান | চ্যানেল আই অনলাইন

বাসচাপায় ডিবির ওসি নিহত, অগ্রিম মরনোত্তর দেহ দান | চ্যানেল আই অনলাইন

গাজীপুরে বাসচাপায় নওগাঁ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজ হাসান (৫২) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী লতিফা জেসমিন (৪৮) গুরুতর আহত হয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে জয়দেবপুর-ঢাকা সড়কের গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইনসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মোস্তাফিজ হাসান রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাতে স্ত্রীকে নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি রেখে সড়ক পার হয়ে পুলিশ লাইনসের বিপরীতে একটি দোকানে যান মোস্তাফিজ। কাজ সেরে ফেরার পথে চান্দনায় ‘পথের সাথী’ পরিবহনের একটি বাস তাদের ধাক্কা দেয়। এতে দুজনই গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মোস্তাফিজকে মৃত ঘোষণা করেন। লতিফা জেসমিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার পর বাস ও বাসের চালককে আটক করা হয়। আটক চালকের নাম সুমন মিয়া। তিনি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার উড়ন গ্রামের কফিল উদ্দিনের ছেলে।

নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মো. সাফিউল সারোয়ার বলেন, ‘ওসি মোস্তাফিজ ছুটিতে স্বজনদের কাছে গিয়েছিলেন বলে জেনেছি।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, বাসটি ও এর চালককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

অপরদিকে, নিহত মোস্তাফিজ হাসান ২০১৫ সালে তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দান করে দিয়েছেন। পাশাপাশি তার মৃত্যুসংবাদ কাউকে জানাতে নিষেধ করেছেন এবং কোনরকম ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা করতে নিষেধ করে দিয়েছেন।

২০২১ সালের আগস্টে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমার পরিচিত জনদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, আমি আমার শরীর ১৫/৯/২০১৫ তারিখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দান করে রেখেছি। আমি আশা করছি আমার মৃত্যুর পর আপনারা আমার ইচ্ছে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন। আরও জানাচ্ছি যে, মৃত্যুর পর আমার মৃত্যুর সংবাদ যত কম মানুষ জানবে আমি ততোই আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। আমার মৃত্যুর সংবাদ কোনভাবেই প্রচার করবেন না। কোন মসজিদের মাইকে, রিক্সার মাইকে, মোবাইল ফোনে, সামাজিক মাধ্যমে ইত্যাদি কোনভাবেই প্রচার করবেন না। মৃত্যুর পর আমার শরীর নিয়ে কোনরকম ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা (যেমন: জানাযা ইত্যাদি) করবেন না। আমি যদি ঋণগ্রস্থ অবস্থায় মারা যাই আর আমার সঞ্চিত অর্থ থেকে ঋণ পরিশোধ না হয় তবে কেউ অপরিশোধিত ঋণ এর জন্য ক্ষমা চাইবেন না বা ব্যাক্তিগত অর্থ দিয়ে তা পরিশোধ করবেন না। পার্থিব জীবনে কারও সাথে কৃত আমার অন্যায়ের জন্য কেউ ক্ষমা চাইবেন না। কারন: ‘‘ভিক্ষায় পাওয়া স্বর্গের চেয়ে, কার্য্যাধীকারে লব্ধ/নরক আমার নিকট অধিকতর আনন্দের!’’

Scroll to Top