ইসির সীমানা নিষ্পত্তিতে ৩০৯ আবেদনের শুনানি | চ্যানেল আই অনলাইন

ইসির সীমানা নিষ্পত্তিতে ৩০৯ আবেদনের শুনানি | চ্যানেল আই অনলাইন

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারণের সীমানা নিষ্পত্তিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৃতীয় দিনের শুনানি চলছে।

ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ২৮টি আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ২৫৯টি আপত্তি ও ৫০টি পরামর্শসহ ৩০৯টি দাবি আপত্তির ওপর শুনানি গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।

মঙ্গলবার ২৬ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব অংশ নেন।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ-১, ২, ৩, মুন্সিগঞ্জ- ১, ২, ৩, গাজীপুর-২ ও ৬, নরসিংদী-৩, ৪ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪, ৫ আসনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং দুপুর আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঢাকা-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ১০, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮ ও ১৯ আসনের বিষয়ে দাবি-আপত্তি শুনানি গ্রহণ করে ইসি।

সাভার উপজেলায় দুটি আসন করার দাবি জানানো হয়। ঢাকা-১৯ আসনের শুনানিতে আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান সাভার উপজেলার দুই থানার ইউনিয়নগুলো এবং সাভার পৌরসভা নিয়ে একটি মডেল আসন করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, ভোটার সংখ্যা বেশি হবে তারপরও এটা একটা মডেল আসন হতে পারে।

শুনানিতে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাকে পৃথক আসন করার দাবি জানান এলাকাবাসী। শুনানিতে দোহার ও নবাবগঞ্জ সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, ২০০৮ সালের আগে সব নির্বাচনে দোহার উপজেলা নিয়ে ঢাকা-১ ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ঢাকা-২ আসন ছিল। এত বড় সংসদীয় আসন একজন জনপ্রতিনিধির প্রতিনিধিত্ব করা কঠিন।

মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের চারটি আসন পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন দুইটি জেলার প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের শুনানিতে তারা এ দাবি জানান।

মানিকগঞ্জের প্রতিনিধি ব্যারিস্টার খাইরুল আলম চৌধুরী বলেন, ২০০১ সাল পর্যন্ত মানিকগঞ্জ জেলায় ৪ টি সংসদীয় আসন ছিল। ২০০৮ সালে মানিকগঞ্জে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করা হয়। এতে করে সংসদে মানিকগঞ্জের জনগণের প্রতিনিধিত্ব কমেছে। বরাদ্দও কমে গেছে।

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা বলেন, আমি এখানে এসেছি মানিকগঞ্জের সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। ২০০১ সালের ন্যায় মানিকগঞ্জে চারটি আসনের দাবি মানিকগঞ্জের সব স্তরের মানুষের দাবি।

গাজীপুরবাসীর একটি আসন বাড়ানোয় শুনানিতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইসিকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে। গাজীপুরের প্রতিনিধিরা দাবি-আপত্তির শুনানিতে এসে ছোটখাটো অভিযোগ করলেও একটি আসন বৃদ্ধি করায় তারা ইসির প্রশংসা করেছেন।

শুনানিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক একেএম ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল গাজীপুরে আসন বাড়ানোর। সিইসি ও অন্য যে নির্বাচন কমিশনার বর্তমানে রয়েছেন, তারা অতীতের যে কোনো সময়ে চেয়ে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতায় আপনার এক নম্বরে রয়েছেন। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে কোনো ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

আগামীকাল চতুর্থ দিনে ২৭ আগস্ট রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও সিলেট অঞ্চলের দাবি আপত্তির ওপর শুনানি হবে। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-১, ২, রংপুর-১, কুড়িগ্রাম-৪, সিরাজগঞ্জ-২, ৫, ৬, পাবনা-১; আড়াইটা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল-৬, জামালপুর-২, কিশোরগঞ্জ-১, সিলেট-১, ফরিদপুর- ১, ৪, মাদারীপুর-২, ৩, শরীয়তপুর-২ ও ৩ আসনের শুনানি হবে।

এর আগে গত রোববার প্রথম দিনে কুমিল্লা অঞ্চলের ৬টি জেলার ১৮টি সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করেছে ইসি। ওইদিন ইসির পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ৪২৯টি আপত্তি এবং ৩৮২টি পরামর্শসহ মোট ৮১১টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

অন্যদিকে গতকাল সোমবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২০টি আসনের সীমানা নিয়ে দাবি আপত্তির ওপর শুনানি গ্রহণ করেছে করেছে ইসি। ওই দিন ৯ জেলার সীমানা নিয়ে ৫১৩ আবেদন নিষ্পত্তি করেছে ইসি।

গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৩টি আসনের সীমানা নিয়ে ১ হাজার ৭৬০টি দাবি আপত্তি জমা পড়ে ইসিতে।

এগুলো নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে ইসি।

Scroll to Top