ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় আরও ৬২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সাহায্য নিতে গিয়ে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (৩ আগস্ট) সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন ও গাজার মেডিকেল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী ভোর থেকে গাজায় ৬২ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। গাজার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শনিবার নিহত কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিতর্কিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে সাহায্য নিতে যাওয়া ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল ঘোষণা করেছিল, তারা কিছু এলাকায় যুদ্ধে কৌশলগত বিরতি বাস্তবায়ন শুরু করবে যাতে ফিলিস্তিনিদের মানবিক সাহায্যের পরিমাণ আরও বাড়ানো যায়। যদিও জিএইচএফ-পরিচালিত স্থানগুলোর কাছে এই মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েল ২৭ জুলাই থেকে সামরিক অভিযানে দৈনিক বিরতি শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে, ফিলিস্তিনি অধিকৃত ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস শুক্রবার জানিয়েছে, শুধুমাত্র বুধবার এবং বৃহস্পতিবারই ত্রাণ নিতে গিয়ে ১০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার অফিসের তথ্য অনুসারে, শুক্রবার পর্যন্ত সাহায্য নিতে গিয়ে কমপক্ষে ১,৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৩ জন শিশুসহ আরও ১৬৯ জন ফিলিস্তিনি অনাহার বা অপুষ্টিতে মারা গেছেন।
গাজার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সহায়তা নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে থাকা মার্কিন ঠিকাদারদের গুলিতে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখোমুখি হয়ে ইসরায়েল সম্প্রতি জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, স্পেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সসহ অন্যান্য দেশগুলোকে বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার অনুমতি দিয়েছে।
কিন্তু ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা, ইউএনআরডব্লিউএসহ মানবিক গোষ্ঠীগুলি সতর্ক করে বলেছে, বিমান থেকে ত্রাণ ফেলা অপর্যাপ্ত এবং স্থলপথে অবাধে সহায়তা সরবরাহ সহজতর করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।