অর্থবহ ছাপ রাখল মালায়ালাম সিনেমা, বাংলার কী খবর? | চ্যানেল আই অনলাইন

অর্থবহ ছাপ রাখল মালায়ালাম সিনেমা, বাংলার কী খবর? | চ্যানেল আই অনলাইন

নতুন পরিচালকের প্রথম ছবি থেকে শুরু করে প্রবীণ তারকাদের কীর্তি— বিভিন্ন বিভাগে সম্মান অর্জনের মধ্য দিয়ে ভারতের ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে একটি বিনয়ী কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে মালায়ালাম সিনেমা।

প্রধান পুরস্কারগুলো না জিতলেও, সহকারী চরিত্র, প্রযোজনা ডিজাইন, সম্পাদনা ও নন-ফিচার বিভাগে মালায়ালাম চলচ্চিত্রশিল্পের বৈচিত্র্য ও গভীরতা উঠে এসেছে স্পষ্টভাবে।

নন্দিত ডকুমেন্টারি নির্মাতা থেকে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে যাত্রা শুরু করা ক্রিস্টো টমি-র প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘উল্লোজুক্কু’ জিতেছে সেরা মালায়ালাম চলচ্চিত্রের পুরস্কার। পানিতে ডুবে থাকা এক মৃতদেহের শেষকৃত্য ঘিরে পারিবারিক টানাপড়েনকে ঘন আবহে তুলে ধরেছে এই চলচ্চিত্র।

এই ছবিতেই একজন বিধ্বস্ত মায়ের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয়ের জন্য বর্ষীয়ান অভিনেত্রী উর্বশী জিতেছেন সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার, যা তার ক্যারিয়ারে এই বিভাগে দ্বিতীয় জাতীয় পুরস্কার। এর আগে ২০০৫ সালে ‘আচুভিন্টে আম্মা’ ছবিতে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

মালায়ালাম সিনেমার অন্যতম পরিচিত মুখ বিজয়ারাঘবন প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে। গনেশ রাজ পরিচালিত ‘পুক্কালাম’ ছবিতে একশো বছর বয়সী এক পরিবারের প্রধানের ভূমিকায় আবেগঘন অভিনয়ের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি পান। ছবিটি এর আগে তাকে প্রথম কেরালা রাজ্য পুরস্কারও এনে দিয়েছিল— যা একপ্রকার ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় সূচিত করল তার জন্য।

একই ছবিতে সম্পাদনার জন্য মিধুন মুরালি জিতেছেন সেরা সম্পাদনার পুরস্কার। ছবির জটিল ও অ-রৈখিক গঠন সহজবোধ্য ও আবেগঘন করে তুলতে তার সম্পাদনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

জুড এন্থনি জোসেফ পরিচালিত ‘২০১৮: এভরিওয়ান ইজ আ হিরো’ ছবিটি কেবল বক্স অফিসে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত। ভারতের পক্ষ থেকে ৯৬তম অস্কার-এ অফিসিয়াল এন্ট্রি হওয়া এই ছবি এবার সেরা প্রোডাকশন ডিজাইন পুরস্কার পেয়েছে। মোহন্দাস-এর চমৎকার সেট ডিজাইন বাস্তবসম্মতভাবে কেরালার বিধ্বংসী বন্যাকে তুলে ধরেছে, যা প্রযুক্তিগত দিক থেকে আঞ্চলিক চলচ্চিত্রের নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

অন্যদিকে, মালয়ালম সাউন্ড ডিজাইনার এমআর রাজাকৃষ্ণান হিন্দি ব্লকবাস্টার ‘অ্যানিমাল’-এ রেকর্ডিং মিক্সিংয়ের জন্য সম্মানিত হয়েছেন। এটি প্রমাণ করে মালায়ালাম শিল্পীরা কেবল তাদের নিজস্ব ভাষায় নয়, পুরো ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পেই প্রভাব বিস্তার করছেন।

নন-ফিচার সেকশনেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে মালায়ালাম। এমকে রামদাস পরিচালিত ডকুমেন্টারি ‘নেকল – ক্রনিকল অব দ্য প্যাডি ম্যান’ বিশেষ প্রশংসা অর্জন করেছে। কেরালার এক নিঃসঙ্গ কৃষকের টিকে থাকার লড়াই এবং টেকসই কৃষিপদ্ধতির গল্প বলেছে এই ছবি, যা প্রমাণ করে মালায়ালাম ডকুমেন্টারিও বিষয়বস্তুর দিক থেকে কতটা সমৃদ্ধ।

পুরস্কারের সংখ্যায় মালয়ালম সিনেমা হয়তো এবছর অতীতের মতো উজ্জ্বল ছিল না, তবে গভীর, অর্থবহ ও মূলগতভাবে মানবিক গল্প বলার দক্ষতায় তারা আবারও প্রমাণ করল- তাদের যাত্রা কখনোই হালকাভাবে নেওয়ার নয়।

অন্যদিকে ৭১তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এবার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সিনেমা ফিরল কার্যত শূন্য হাতেই। উল্লেখযোগ্য কোনো বিভাগে পুরস্কার না পেলেও, ‘ডিপ ফ্রিজ’ ছবিটি বাংলা ভাষার সেরা ছবি হিসেবে অঞ্চলভিত্তিক পুরস্কার পেয়েছে। এটি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে আর কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি অর্জন করতে পারেনি। ফিল্মফেয়ার

Scroll to Top