কবরের সংকটে এক গ্রামের হাসি-কান্নার গল্প

কবরের সংকটে এক গ্রামের হাসি-কান্নার গল্প

ঢাকাপ্রতিদিন বিনোদন ডেস্ক : চিট্টি জয়পুরম—একটি শান্তশিষ্ট গ্রাম। সেখানকার কবরস্থানে জায়গা আছে মাত্র চারটি। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান গ্রামের প্রধান। চিন্তিত পুরো গ্রামবাসীও।

সমাধানের খোঁজে প্রধান আশপাশের গ্রামে জমি চান, কেউ দিতে চায় না, কেউ আবার আকাশছোঁয়া দাম চায়। জমির বন্দোবস্ত না হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয়, লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে—কে পাবেন শেষ কবরগুলো।ঠিক তখনই ঘটে অপ্রত্যাশিত ঘটনা—বিষাক্ত মদ খেয়ে হঠাৎ মারা যায় চারজন। কবরের শেষ চারটি জায়গা চলে যায় তাদের দখলে।

আবারও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান প্রধান। কী করা যায়? তিনি ভাবেন পুরনো কবরগুলো খালি করে নতুন কবর বানানো যায় কি না। পুরনো কবর খুঁজতে শুরুও করেন। কিন্তু গ্রামবাসী তাতে রাজি নয়।

তাদের দাবি, পূর্বপুরুষের কবর ভাঙা যাবে না।এই ব্যতিক্রমী সংকট আর তার মাঝখানে জন্ম নেওয়া আবেগ, রসবোধ ও নেতৃত্বের গল্প নিয়েই নির্মিত হয়েছে তেলেগু ভাষার সিনেমা ‘উপ্পু কাপ্পুরম্বু’। অর্থাৎ লবণ আর কর্পূর—দেখতে একই হলেও গুণে ভিন্ন। এই রূপক ধরেই ফুটে উঠেছে গল্পের সূক্ষ্ম সব মূল্যবোধ। ১৭শ শতকের তেলেগু দার্শনিক-কবি ভেমানার একটি কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সিনেমাটির নাম ও ভাবনা নেওয়া হয়েছে।

মুক্তি পেয়েছে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে।

গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে অপূর্বা—যার ভূমিকায় কীর্তি সুরেশ। বাবার অকালমৃত্যুর পর অনিচ্ছাসত্ত্বেও গ্রামের প্রধানের দায়িত্ব নিতে হয় তাকে। রাজনীতি বা প্রশাসনের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় শুরুতে অনভিজ্ঞতা ও অদ্ভুত ব্যবহারে গ্রামবাসী সন্দিহান ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই দুর্বলতাই তার শক্তিতে পরিণত হয়। তিনি হয়ে ওঠেন একজন মাটির মানুষ, সংবেদনশীল নেত্রী।

যদিও কোথাও কোথাও ছবির গতি কিছুটা ধীর মনে হতে পারে, আবার কিছু নাটকীয়তা বাড়াবাড়ি বলে মনে হতে পারে, তবে হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া অভিনয়, অনন্য কাহিনি ও ব্যঙ্গ-রসের সংমিশ্রণে সিনেমাটি দর্শককে ধরে রাখে শেষ পর্যন্ত। ‘উপ্পু কাপ্পুরম্বু’ এক কোমল, ভাবনাজাগানিয়া সিনেমা—যা নেতৃত্ব, হারানো এবং মানুষের অদেখা গুণাবলি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, ভাবায়, আর একসঙ্গে বাঁচার মূল্যবোধ শিখিয়ে যায়।
ঢাকাপ্রতিদিন/এআর

Scroll to Top