স্পোর্টস ডেস্ক : উইমেন’স ইউরো ২০২৫-এর রোমাঞ্চকর ফাইনালে রোববার ক্লোই কেলির জয়সূচক পেনাল্টি শটে স্পেনকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখল ইংল্যান্ড। অতিরিক্ত সময় শেষে ১-১ গোলে ম্যাচটি ড্র হলে পেনাল্টি শুটআউটে গড়ায়, যেখানে জয় নিশ্চিত করে ইংলিশরা। তিন বছর আগের চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রেখে তারা আবারও ইউরোপের সেরা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করল।
ফের একবার প্রত্যাবর্তনের গল্প
ইংল্যান্ডের কোচ সারিনা উইগম্যানের অধীনে দলটি পুরো টুর্নামেন্টেই ছিল দারুণ দৃঢ়চিত্ত। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচ টাই করে পেনাল্টিতে জয় পায়। সেমি-ফাইনালে ইতালির বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে একমাত্র গোলেই জায়গা করে নেয় ফাইনালে।
স্পেনের শুরুটা ভালো হলেও…
২৫তম মিনিটে প্রথমে এগিয়ে যায় বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও নেশনস লিগজয়ী স্পেন। ওনা বাতিয়ে’র ক্রসে ইংল্যান্ডের রক্ষণে গোলরক্ষকের ভুলের সুযোগ নিয়ে হেডে গোল করেন মারিওনা কালদেন্তে।
তবে প্রথমার্ধেই ইংল্যান্ড একটি বড় সিদ্ধান্ত নেয়। চোটের কারণে দুর্বল পারফর্ম করা লরেন জেমসকে তুলে মাঠে নামানো হয় ক্লোই কেলিকে। এই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে গেম-চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭তম মিনিটে কেলি বাম দিক থেকে দুর্দান্ত একটি ক্রস দেন, যেটি হেড করে জালে পাঠান আলেসিয়া রুসো, ম্যাচে সমতা ফেরে ১-১ গোলে।
রক্ষণে জমে ওঠে লড়াই
বাকি সময় এবং অতিরিক্ত সময়ে স্পেন বলের দখলে আধিপত্য দেখালেও ইংলিশ ডিফেন্স ভেঙে গোল করতে পারেনি। একের পর এক আক্রমণ করেও ব্যর্থ হয় তারা।
পেনাল্টিতে হ্যাম্পটনের নায়কোচিত মুহূর্ত
পেনাল্টি শুটআউটে শুরুটা ভালো করে স্পেন – তাদের গোলরক্ষক কাটা কোল ইংল্যান্ডের বেথ মিডের শট ঠেকিয়ে দেন। তবে ইংল্যান্ডের হান্না হ্যাম্পটন দুর্দান্তভাবে পাল্টা জবাব দেন। তিনি মারিওনা কালদেন্তে এবং বলন ডি’অর জয়ী এইতানা বোনমাতির শট রুখে দিয়ে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেন।
স্পেন আবারও ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে, কোল ঠেকান লিয়া উইলিয়ামসনের শট। তবে স্পেনের বদলি খেলোয়াড় সালমা পারালুয়েলো শট মারেন বাইরে।
আবারও নায়িকা ক্লোই কেলি
সেই সুযোগে আবারও সামনে আসেন ক্লোই কেলি। ২০২২ সালের মতো এবারও তাঁর পা থেকেই আসে শিরোপা জয়ের মুহূর্ত। নির্ভার ভঙ্গিতে পরিচিত নাচের মতো রান-আপ নিয়ে জোরালো শটে জালে বল জড়ান তিনি এবং উল্লাসে ফেটে পড়েন সতীর্থদের সঙ্গে।
ম্যাচের নায়িকা কেলি বলেন, “এই দলের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে খেলতে পেরে কৃতজ্ঞ। আমি জানতাম বলটা জালে যাবে।”
“অবিশ্বাস্য! আমরা দেখিয়েছি, আমরা কখনো হাল ছাড়ি না। ইংলিশ সাহস আমাদের রক্তে — আর আজ সেটাই প্রমাণ করেছি,” — আবেগঘন প্রতিক্রিয়ায় বললেন গোলরক্ষক হান্না হ্যাম্পটন।
একটি ঐতিহাসিক ফাইনাল
১৯৮৪ সালের পর এই প্রথমবার ইউরো ফাইনাল পেনাল্টি শুটআউটে গড়াল। তখন ইংল্যান্ড হেরে গিয়েছিল সুইডেনের কাছে। এবার তারা জিতেই শেষ করল অতীতের হতাশা।