আহান পাণ্ডে ও আনীত পাড্ডা অভিনীত ‘সাইয়ারা’ হয়ে উঠেছে জেনারেশন জেড-এর এক অনবদ্য আবেগের অভিজ্ঞতা। ভালোবাসা, বিচ্ছেদ ও হৃদয়ভাঙা অনুভূতির তীব্র চিত্রায়ন এ ছবিকে করে তুলেছে সময়ের অন্যতম আলোচিত রোমান্টিক ড্রামা।
পরিচালক মোহিত সুরির জগতে এই মুহূর্তে যেন সবাই ডুবে আছে—হলগুলোর ভেতর শার্ট খুলে নাচ, উল্লাসে চিৎকার, এমনকি স্যালাইন নিয়ে সিনেমা দেখা—এসব অদ্ভুত সব দৃশ্যই এখন ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই উন্মাদনার মধ্যেই মিলেনিয়াল প্রজন্মও চুপ করে নেই। তারা ফিরে যাচ্ছে তাদের নিজের সময়ের আবেগময় ক্লাসিকের দিকে—তুলনা টানছে ‘তেরে নাম’ (২০০৩) এবং ‘সদমা’ (১৯৮৩)–এর সঙ্গে।
‘তেরে নাম’, সলমান খানের সেই ট্র্যাজিক লাভ স্টোরি, আজও মানুষের মনে রয়ে গেছে এক অবসন্ন দাগ হয়ে। সাতিশ কৌশিক পরিচালিত এই সিনেমায় প্রেম, বিচ্ছেদ আর বেদনাকে এমনভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল, যা অনেকের জীবনেই আবেগের এক বিপর্যয় তৈরি করেছিল। রাধে চরিত্রে সলমান খানের পাগলামির অভিনয়, হিমেশ রেশমিয়ার অমর গান এবং অনাকাঙ্ক্ষিত সেই ট্র্যাজিক ক্লাইম্যাক্স—সব মিলিয়ে ‘তেরে নাম’ যেন ছিল প্রেমে মোড়ানো এক দীর্ঘশ্বাস।
একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী একটি মন্টাজ শেয়ার করে ‘সাইয়ারা’-তে বুঁদ জেনজেডের উদ্দেশে কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘তেরে নাম’ আবার রিলিজ হলে আজকের জেনারেশনকে সামলাতে থিয়েটারের বাইরে অ্যাম্বুলেন্স রাখতে হবে!
আরও নানা প্রতিক্রিয়ায় উঠে এসেছে মন্তব্য ‘তেরে নাম’-এর ক্রেজের সাথে ‘সাইয়ারা’র তুলনা। একজন লিখেছেন, “এই বাচ্চা বাচ্চা সিনেমা বানানো বন্ধ করো, ‘তেরে নাম’ আবার রিলিজ করো। তখন দেখো পাগলামি কাকে বলে।”
অন্য আরেকজন ‘সাইয়ারা’ প্রেমী দর্শককে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “আজকের ছেলেমেয়েদের হৃদয় খুব দুর্বল।” নিজেদের সময়ের সেরা সিনেমা ‘তেরে নাম’-এর গুরুত্ব বোঝাতে অন্য আরেক দর্শক লিখেছেন,“তেরেনাম মুক্তি দিলেই আধা ঘণ্টার মধ্যে অর্ধেক দর্শক ট্রমায় পড়ে যাবে।”
শুধু ‘তেরে নাম’ নয়, এরই সঙ্গে অনেকে মনে করছেন আরেক ক্লাসিক ‘সদমা’–এর নাম। কারণ সেই ছবিটিও একই আবেগ তৈরি করেছিল। কমল হাসান ও শ্রীদেবীর অভিনয়ে নির্মিত এই সিনেমায় ছিল নিঃশব্দে ভেতরটা ছিঁড়ে দেওয়া এক করুণ গল্প! শ্রীদেবীর চরিত্র নেহালতা এক দুর্ঘটনার পর শিশুসুলভ মনোভাব নিয়ে ফিরে আসে। কমল হাসানের চরিত্র সোমু তাকে ভালোবাসে, যত্ন করে। কিন্তু যখন সে তার স্মৃতি ফিরে পায়, তখন সোমুকে আর চিনতে পারে না। সিনেমার শেষ দৃশ্যে ট্রেন প্ল্যাটফর্মের সেই কান্নাভেজা বিদায় আজও বহু দর্শকের মন থেকে মোছা যায়নি।
‘সাইয়ারা’ এখন যেন সেই একই হৃদয়ভাঙা অনুভব ফিরিয়ে আনছে নতুন প্রজন্মের কাছে। ভালোবাসুন বা না-ই বাসুন, মোহিত সুরির ‘সাইয়ারা’কে উপেক্ষা করা যাচ্ছে না কিছুতেই। প্রেম, যন্ত্রণা আর অনুভূতির এমন বিস্ফোরণে কেউ কেউ বলছেন—এ যেন আজকের প্রজন্মের ‘তেরেনাম’! –নিউজ এইটিন