মঙ্গলবার সকালে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মেট্রোরেলে চড়ে বসলে এক বিষণ্নতার ট্রেনে ঢুকে গেলাম যেন। যাত্রীদের মধ্যে কোনো কোলাহল নেই। সবার চেহারা শোকে বিমর্ষ। কী এক চাপা নিরবতা। হুট করে কারও মুঠোফোনের ফেসবুকে স্ক্রলের ভিডিওতে আগের দিন স্কুলের ভবনের ওপর বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার বর্ণনা ভেসে এল। মেট্রোরেলের পরিবেশ যেন আরও গুমোট হয়ে গেল।
কেন যেন আজকে আরও বেশি সময় লাগল উত্তরায় পৌঁছাতে। শেষ স্টেশনে নেমে সামান্য হাঁটলেই স্কুলটির মোড়। সেখানে দেখা গেল বিক্ষোভ চলছে। সবার গায়ে হয় স্কুল ইউনিফর্ম বা গলায় আইডি কার্ড। এর বাইরে কিছু তরুণকে দেখলাম প্ল্যাকার্ড হাতে, যাদের শিক্ষার্থী বা অভিভাবক—কোনোটাই মনে হলো না বেশভূষায়, বাইরের বা স্থানীয় লোকজনও হতে পারে। শিক্ষার্থীদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা: উই ওয়ান্ট জাস্টিস, প্রে ফর বাংলাদেশ, জুলাই ২.০, লাশের হিসাব কই?
সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে স্কুলের দিকে গেল। তাদের সঙ্গে স্কুলের দিকে হাঁটার সময় কয়েকজন গণমাধ্যমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করল: মিডিয়া কেন সত্য প্রকাশ করছে না, ওরা কেন লাশের সঠিক সংখ্যা বলছে না।
কিন্তু লাশের সংখ্যা যে গোনা এখনো শেষ হয়নি আর মিডিয়া চাইলেই নিজ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করতে পারে না; পুলিশ, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস—অনেক জায়গা থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হয়, সেসব যুক্তি তাদের না দেখানোই উচিত মনে হলো। তাদের ব্যাখ্যা করতে গেলাম না, এরকম দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এত দ্রুত হতাহতের সংখ্যা সুস্পষ্টভাবে বলা বা প্রকাশ করা আদৌ সম্ভব কী না? শোক ও ক্ষোভই প্রকাশ করুক তারা।