গত মে-জুনে পাকিস্তানে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টিতে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জিতে দেশে ফিরেই আরও একটি সিরিজ জয় টাইগারদের। ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে জয়ের দ্বিতীয়টিতেও ধারাবাহিক লিটন দাসের দল। পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয় এটি।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আঘা। নির্ধারিত ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানের সংগ্রহ গড়ে টিম টাইগার্স। জবাবে নেমে ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
লক্ষ্যতাড়ায় পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে শুরু থেকেই চেপে ধরে বাংলাদেশ। ১৫ রানে সফরকারীদের ৫ উইকেট তুলে নেয় টিম টাইগার্স। ফিরে যান সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ হারিস, ফখর জামান, হাসান নেওয়াজ ও মোহাম্মদ নেওয়াজ। ষষ্ঠ উইকেটে ১৫ রান যোগ করেন সালমান আঘা ও খুশদিল শাহ। ৯.২ ওভারে দলীয় ৩০ রানে সালমান ফেরেন ৯ বলে ২৩ রান করে।
সপ্তম উইকেটে ১৭ রান যোগ করেন খুশদিল ও ফাহিম আশরাফ। ১১.৫ ওভারে খুশদিলকে ফেরালেন শেখ মেহেদী। ১৮ বলে ১৩ রান করেন পাকিস্তান অলরাউন্ডার।
অষ্টম উইকেটে ফাহিম ও আব্বাস আফ্রিদি মিলে যোগ করেন ২৭ বলে ৪১ রান। ১৬.১ ওভারে দলীয় ৮৮ রানে আফ্রিদিকে বোল্ড করেন শরিফুল। দুই চার ও এক ছক্কায় ১৩ বলে ১৯ রান করেন।
পরে আহমেদ ড্যানিয়েলকে সঙ্গী করে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ফিফটি পূর্ণ করেন ফাহিম। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ৩১ বলে ফিফটির পথে ছিল চারটি করে চার ও ছক্কার মার। পরের বল তাকে বোল্ড করেন রিশাদ। ৩২ বলে ৫১ রান করেন।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান, হাতে ছিল ১ উইকেট। মোস্তাফিজের প্রথম বলে চার মারেন আহেমেদ ড্যানিয়েল। পরের বলে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারেন। তবে বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন শামীম হোসেনের হাতে। ১১ বলে ১৭ রান করেন অভিষিক্ত ড্যানিয়েল। পাকিস্তানের ইনিংস থামে ১২৫ রানে।
বাংলাদেশ বোলাদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম ৩ উইকেট নেন। তানজিম সাকিব ও শেখ মেহেদী নেন দুটি করে উইকেট। মোস্তাফিজ ও রিশাদ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিমকে বসিয়ে একাদশে সুযোগ দেয়া নাঈম শেখ সুবিচার করতে পারেননি। ৭ বলে ৩ রান করে ফিরে যান ফাহিম আশরাফের বলে মোহাম্মদ হারিসের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে।
৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর লিটন দাস ও পারভেজ হোসেন ইমন যোগ করেন আরও ২০ রান। ২৫ রানে জোড়া উইকেট হারায় টিম টাইগার্স। লিটন ৯ বলে ৮ রান করে ফিরে যাওয়ার পর রানআউট হয়ে তাওহীদ হৃদয় ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
২৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ফিফটি করা ইমন ফিরে যান ১৪ বলে ১৩ রান করে। চাপে পড়া বাংলাদেশের হাল ধরেন জাকের আলি অনিক ও শেখ মেহেদী হাসান। পঞ্চম উইকেটে ৪৯ বলে ৫৩ রানের জুটি গড়ে চাপ কাটিয়ে তোলেন।
১৪তম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৮১ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় টিম টাইগার্স। শেখ মেহেদী ফিরে যান মোহাম্মদ নেওয়াজের বলে লংঅফে হাসান নেওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে। দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৫ বলে ৩৩ রান করেন টাইগার অলরাউন্ডার।
৯৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় স্বাগতিক দল। আহমেদ ড্যানিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ৪ বলে ১ রান করেন। ১০০ রানে সপ্তম উইকেট যায়। ৪ বলে ৭ রান করা তানজিম সাকিব ফিরে যান সালমান মির্জার শিকার হয়ে। ১১১ রানে রিশাদ ফিরে যান। ৪ বলে ৮ রান করে আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হন।
১৯.৩ ওভারে ১২৭ রানে নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানআউট হয়ে ফেরেন ২ বলে ১ রান করা শরিফুল। পরের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টি-টুয়েন্টি ফিফটি পূর্ণ করেন জাকের। ৪৬ বলে ফিফটির পথে ছিল এক চার ও ৫ ছক্কার মার। ইনিংসের শেষ বলে ক্যাচ দেন জাকের। বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৩৩ রানে।
পাকিস্তান বোলারদের মধ্যে আহমেদ ড্যানিয়েল, আব্বাস আফ্রিদি ও সালমান মির্জা দুটি করে উইকেট নেন।