Last Updated:
Indian Cricketer: তিনি অনেকবার ভারতীয় দলের জন্য সঙ্কটমোচকের ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর টেকনিকের কারণে বলা হত দ্বিতীয় গাভাসকর। কিন্তু দীর্ঘায়িত হয়নি কেরিয়ার।

ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকর ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর কমেন্ট্রিতে প্রবেশ করেন। তিনি বিশ্বের বিখ্যাত ক্রিকেট কমেন্টেটরদের মধ্যে একজন। ১২ জুলাই নিজের ৬০ তম জন্মদিন পালন করলেন সঞ্জয় মঞ্জরেকর। তিনি অনেকবার ভারতীয় দলের জন্য সঙ্কটমোচকের ভূমিকা পালন করেছেন। হারারেতে খেলা এক টেস্ট ম্যাচে, যেখানে সচিন তেন্ডুলকর এবং মহম্মদ আজহারউদ্দিনের মতো কিংবদন্তিরা ব্যর্থ হন, সেখানে মঞ্জরেকর একাই দাঁড়িয়ে যান। তিনি প্রায় ৯ ঘণ্টা ব্যাট করে শতরান করেন এবং টেস্ট ম্যাচটি ড্র করতে সক্ষম হন। মঞ্জরেকরের ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট আধিপত্য ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি যতটা সফল হন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ততটা পারেননি। তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন যে, তাঁর কেরিয়ার রাহুল দ্রাবিড় ও সৌরভ গাঙ্গুলির কারণে আগেভাগেই শেষ হয়ে যায়।
সঞ্জয় মঞ্জরেকর বর্তমানে একজন ক্রিকেট কমেন্টেটর হিসেবে কাজ করছেন। তিনি আইপিএলের একটি মরশুমে কমেন্ট্রির জন্য কোটি কোটি টাকা নেন। ২০১৮ সালে তিনি তাঁর আত্মজীবনী ‘ইমপারফেক্ট’ প্রকাশ করেন। এই বইয়ে মঞ্জরেকর তাঁর ক্রিকেট জীবনের বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, যখন তিনি ক্রিকেটকে বিদায় জানান, তখন তিনি ফর্মে ছিলেন না— এমনটা একেবারেই নয়। মঞ্জরেকর লিখেছেন,সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রাহুল দ্রাবিড়ের খেলা দেখে তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে, এখন তাঁর সময় শেষ হয়ে গেছে। তিনি ৩২ বছর বয়সে অবসর ঘোষণা করে দিয়েছিলেন।’
মঞ্জরেকর তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ১৯৯৬ সালের ইংল্যান্ড সফরে যখন ভারতীয় দল গিয়েছিল, তখন দ্রাবিড়ের থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল। মঞ্জরেকর বলেন, সেই সফরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় উঠে আসেন। দ্রাবিড়ের প্রশংসা করে তিনি লেখেন— মনে হয়েছিল যেন তিনি ভারতের দলের জন্যই তৈরি। যখন আমি তাঁকে খেলতে দেখলাম এবং যেভাবে তিনি ব্যাট করছিলেন, তখনই বুঝে গেলাম, আমার সময় শেষ। মঞ্জরেকর একজন টেকনিক্যালি পারফেক্ট ব্যাটার ছিলেন। তিনি বিদেশেও প্রচুর রান করেছেন। সচিন তেন্ডুলকর তাঁকে ‘মিস্টার ডিফারেন্ট’ নাম দিয়েছিলেন।
মঞ্জরেকর ১১১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। টেকনিকের দিক থেকে তিনি অসাধারণ ছিলেন। তাঁর তুলনা করা হতো সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে। ১৯৯২ সালে ভারতীয় দল যখন হারের মুখে ছিল, তখন মঞ্জরেকরের কারণে দল ম্যাচটি ড্র করতে সক্ষম হয়। হারারেতে টেস্ট ম্যাচে জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ৪৫৬ রান করে। এরপর আজহারউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলের শুরুটাই খারাপ হয়। রবি শাস্ত্রী (১১),সচিন তেন্ডুলকর (০) এবং আজহারউদ্দিন (৯) দ্রুত আউট হয়ে যান। ভারতের ৫টি উইকেট পড়ে যায় ১০১ রানে। কিন্তু মঞ্জরেকর প্রায় ৯ ঘণ্টা ব্যাট করে দলকে ৩০০ রানের ওপরে নিয়ে যান। তিনি ৪২২টি বল মোকাবিলা করে শতরান করেন। ম্যাচটি ড্র হয়।
সঞ্জয় মঞ্জরেকর ৩৭টি টেস্ট ম্যাচে ৩৭ গড়ে ২০৪৩ রান করেছেন। এই সময়ে তিনি ৪টি শতরান ও ৭টি অর্ধশতরান করেছেন। তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ২১৮ রান। তিনি ৭৪টি ওয়ানডে খেলেছেন এবং ৩৩ গড়ে ১৯৯৪ রান করেছেন। তিনি একটিমাত্র শতরান ও ১৫টি অর্ধশতরান করেছেন। তিনি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ১০ হাজারেরও বেশি রান করেছেন। ১৪৭টি ম্যাচে তাঁর রানসংখ্যা ১০২৫২, গড় ৫৫। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৩১টি শতরান এবং ৪৬টি অর্ধশতরান।
Kolkata,West Bengal
July 13, 2025 8:05 PM IST