গিলের রেকর্ডময় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় ভারতের | চ্যানেল আই অনলাইন

গিলের রেকর্ডময় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় জয় ভারতের | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

এজবাস্টনে ব্যক্তিগত অর্জনে মহাকাব্য রচনা করেছেন শুভমন গিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নাম লিখিয়েছেন রেকর্ডবইয়ের একাধিক পাতায়। প্রথম ইনিংসে ২৬৯, দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১৬১ রান। তাতে ইংলিশদের সামনে চতুর্থ ইনিংসে ছয়শতাধিক রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় ভারত। হিমালয়সম রান তাড়ায় নেমে আকাশ দীপের তোপে গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। ৩৩৬ রানের বড় জয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরল ভারত।

টসে হেরে আগে ব্যাটে নেমে প্রথম ইনিংসে ৫৮৭ রান করে ভারত। জবাবে নেমে ইংল্যান্ড থামে ৪০৭ রানে। ১৮০ রানে এগিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ৬ উইকেটে ৪২৭ রান যোগ করে ইংলিশদের ব্যাটে পাঠায়। ৬০৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে স্বাগতিক দলটি থেমেছে ৬৮.১ ওভারে ২৭১ রান করে।

৩ উইকেটে ৭২ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। পঞ্চম দিনের শুরুতেই দুই ব্যাটারকে হারায় তারা। অলি পোপ ২৪ রানে এবং হ্যারি ব্রুক ২৩ রানে ফিরে যান। ৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েন বেন স্টোকস ও জেমি স্মিথ। দুজনে মিলে যোগ করেন ৭০ রান। ১৫৩ রানে স্টোকস ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ৩৩ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক।

১৯৯ রানে ক্রিস ওকস ফিরে গেলে সপ্তম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ওকস ৭ রান করেন। একপ্রান্তে প্রতিরোধ গড়া জেমি স্মিথ ফিরে যান দলীয় ২২৬ রানে। ৯৯ বলে ৮৮ রান করেন এই ব্যাটার। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ এটি। ২৪৬ রানে ফিরে যান জশ টং। ২৯ বলে ২ রান করেন এই লোয়ারঅর্ডার ব্যাটার। ২৭১ রানে বাইডন কার্স ফিরে গেলে গুটিয়ে যায় ইংলিশদের যাত্রা। কার্স ৩৮ রান করেন। এছাড়া বেন ডাকেট ২৫ রান করেন।

ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট খেলতে নেমে প্রথমবার পাঁচ বা তার বেশি উইকেট শিকার করেছেন আকাশ দীপ। দ্বিতীয় ভারত পেসার ২১.১ ওভার বল করে ৯৯ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসেও দারুণ ছিলেন আকাশ। ২০ ওভারে ৮৮ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট।

এজবাস্টন টেস্টে একাধিক রেকর্ড গড়েছেন গিল। প্রথম ইনিংসে ২৬৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬২ বলে ১৬১ রান করেন। দু-ইনিংস মিলিয়ে ৪৩০ রান করেন ভারত অধিনায়ক। ভারতের হয়ে এক টেস্টে চারশ রান করা প্রথম ক্রিকেটার তিনি। ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গাভাস্কারের ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি মিলে ৩৪৪ রান ছিল আগের রেকর্ড। এক টেস্টে এর চেয়ে বেশি রান আছে শুধু একজনেরই। ১৯৯০ সালে লর্ডসে ভারতের বিপক্ষে দুই ইনিংসে ৪৫৬ রান করেছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক গ্রাহাম গুচ (৩৩৩ ও ১২৩)।

১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নবম ক্রিকেটার হিসেবে একই টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন গিল। ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে তার আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন কেবল সুনীল গাভাস্কার। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে পোর্ট অব স্পেনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২৪ ও ২২০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে গিলের আগে এই কীর্তি গড়তে পারেন কেবল গ্রাহাম গুচ। ১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে ৩৩৩ ও ১২৩ রান করেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। অধিনায়ক হিসেবে একই টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি গিলের আগে করেছেন কেবল গুচ। তবে একই টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি ও দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস খেলা একমাত্র ক্রিকেটার গিল।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ভারতের ৫৮৭ রানের পথে গিলের ২৬৯ রানের পাশাপাশি রান পেয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও যশ্বী জয়সওয়াল। জাদেজা ৮৯ রান করেন, জয়সওয়ান করেন ৮৭ রান। এছাড়া ওয়াশিংটন সুন্দর ৪২ এবং করুণ নায়ের ৩১ রান করেন।

ইংলিশদের হয়ে প্রথম ইনিংসে শোয়েব বশির ৩ উইকেট নেন। ক্রিসে ওকস ও জশ টং নেন দুটি করে উইকেট।

জবাবে নেমে ৪০৭ রান তোলার পথে ইংল্যান্ড দুটি সেঞ্চুরি পায়। জেমি স্মিথ ২০৭ বলে ১৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ২৩৪ বলে ১৫৮ রান করেন হ্যারি ব্রুক। এছাড়া বাকিদের মধ্যে কেবল দুজনই দু-অঙ্কের ঘরে পৌঁছান- জ্যাক ক্রলি ১৯ এবং জো রুট ২২ রান করেন।

ভারতীয় বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ সিরাজ দারুণ করেন। ১৯.৩ ওভারে ৭০ রান খরচায় নেন ৬ উইকেট। আকাশ দীপ নেন ৪ উইকেট।

দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ৪২৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। গিল ১৬২ বলে ১৬১ রান করেন। পাশপাশি তিনটি ফিফটি পায় সফরকারী দলটি। জাদেজা ৬৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। রিশভ পান্ট ৬৫ রান এবং লোকেশ রাহুল করেন ৫৫ রান। বাকিদের মধ্যে জয়সওয়াল ২৮ রান এবং করুণ নায়ের ২৬ রান করেন।

ইংলিশ বোলারদের হয়ে শোয়েব বশির ও জশ টং দুটি করে উইকেট নেন।

Scroll to Top