জনপ্রতি হাত ধুতে বছরে খরচ হয় ৩১ হাজার লিটার পানি – DesheBideshe

জনপ্রতি হাত ধুতে বছরে খরচ হয় ৩১ হাজার লিটার পানি – DesheBideshe


জনপ্রতি হাত ধুতে বছরে খরচ হয় ৩১ হাজার লিটার পানি – DesheBideshe

ঢাকা, ২৩ জুন – বাংলাদেশে একজন মানুষ বছরে শুধু হাত ধোয়ার জন্য গড়ে ৩১ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করছেন—যা পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে পানি অপচয়ের অন্যতম বড় কারণ হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘পরিবেশ, পরিবর্তন ও দুর্যোগ পরিসংখ্যান শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’-এর সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন মানুষ প্রতি বছর হাত ধোয়ার জন্য গড়ে ৩১ হাজার ৩২ লিটার পানি ব্যবহার করেন। এতে ব্যয় হয় প্রায় ৯৮১ টাকা।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘হাউজহোল্ড বেজড এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে (এইচবিইএস) ২০২৪’ পরিচালিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি প্রতি বছর গড়ে ৯৮১ টাকার সমপরিমাণ পানি ব্যবহার করেন হাত ধোয়ার কাজে। গ্রাম এলাকায় এই ব্যয় ৮৩১ টাকা এবং শহরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৩১১ টাকায়। গ্রামে একজনের হাত ধোয়ার পানি ব্যবহার গড়ে ৩১ হাজার ১৮৪ লিটার, শহরে ৩০ হাজার ৬৮৩ লিটার।

একই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গত ৮ বছরে দেশে বনভূমি কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ। ২০১৫ সালে দেশে বনভূমির পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৪৯৯ দশমিক ০৮ বর্গকিলোমিটার (১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ)। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৮ দশমিক ১৮ বর্গকিলোমিটার (১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ)।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সার্বিকভাবে বনভূমি কমলেও কৃত্রিম উপায়ে সৃজিত বনভূমির পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৫ সালে এ ধরনের বন ছিল এক হাজার ৩৪১ দশমিক ৪৮ বর্গকিলোমিটার, যা ২০২৩ সালে ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭০৮ বর্গকিলোমিটারে।

এছাড়া কৃষি জমিও কমছে। ২০১৫ সালে দেশে কৃষি জমির পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩৮৬ দশমিক ৬৩ বর্গকিলোমিটার। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার ৯১৫ দশমিক ৭৪ বর্গকিলোমিটারে। অর্থাৎ কৃষি জমি কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এই প্রতিবেদনের তথ্যগুলো জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশের অবস্থান দৃঢ় করবে। সচিব আলেয়া আক্তার বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য পরিবেশ ও জলবায়ু সম্পর্কিত সঠিক নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ তিনি জানান, প্রকল্পটি নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন হচ্ছে।

বিশেষ অতিথি ড. এ কে এনামুল হক বলেন, ‘আমরাই আমাদের সম্পদ ধ্বংস করছি। কৃষি জমিতে এখন জিঙ্ক নেই, যার ফলে অনেক প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নিচ্ছে। আগে হাওরে প্রচুর খালি জমি ছিল, এখন নেই। পশুপাখিও কমে গেছে। আগে যেসব স্থানে জঙ্গল ছিল, সেগুলো এখন হারিয়ে গেছে। নগরায়ন দ্রুতগতিতে বাড়ছে, যার ফলে পরিবেশ সংকট বাড়ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা গড়ে ৭২ লিটার পানি অপচয় করি। সচেতন না হলে সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।’

সূত্র: ইত্তেফাক
আইএ/ ২৩ জুন ২০২৫



Scroll to Top