১৭ বছর পর আইপিএলে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিরাট কোহলিদের শিরোপা উল্লাস ছিল দেখার মতো। সেই উদযাপন পরিণত হয়েছিল শোকেও। বেঙ্গালুরুতে উদযাপনের সময় পদদলিত হয়ে মারা যান ১১ জন। ঘটনায় নড়েচড়ে বসে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বিসিসিআই। ভবিষ্যতে যেন এমন না ঘটে, তাই নির্দেশিকা আনছে বোর্ডটি।
গত ১৪ জুন বৈঠকে নির্দেশিকা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় বিসিসিআই। বোর্ড সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া, সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা ও কোষাধ্যক্ষ প্রভাতেজ সিং ভাটিয়াকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। ১৫ দিনের মধ্যে নির্দেশিকা তৈরি করতে বলা হয় তাদের।
কমিটি ভবিষ্যতের জন্য নিরাপত্তা নির্দেশিকা তৈরি ও বাস্তবায়নে কাজ করছে। কিছু নির্দেশনা প্রস্তাবও করেছে তারা। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়ার বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যমে খবর, ‘বোর্ড বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি ঝুঁকির দিক বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে আইপিএলে শিরোপা জয়ের পর জনসমাগমে উদযাপন করতে চাইলে বিসিসিআইয়ের আনুষ্ঠানিক নির্দেশিকা মানতে হবে।
বেঙ্গালুরুর উদযাপনে মৃত্যুর মতো ঘটনা ঠেকাতে যে নির্দেশিকাগুলো আনছে বিসিসিআই-
*শিরোপা জয়ের ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কোন উদযাপন করা যাবে না।
* বিশৃঙ্খলা এড়াতে হুটহাট ও তাড়াহুড়া করে কোন আয়োজনে অনুমতি দেয়া হবে না।
* উদযাপনের জন্য কোন ইভেন্ট আয়োজনে বিসিসিআই থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমতি নিতে হবে।
* বোর্ডের লিখিত অনুমোদন ছাড়া কোন ইভেন্ট আয়োজন করা যাবে না।
* ৪ থেকে ৫ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাধ্যতামূলক থাকতে হবে।
* প্রতিটি ভেন্যু ও যাতায়াত পথে বহু-স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
* বিমানবন্দর থেকে ইভেন্ট ভেন্যু পর্যন্ত দলের চলাচলের সময় সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
* খেলোয়াড় ও স্টাফদের জন্য ইভেন্টজুড়ে পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
*জেলা পুলিশ, রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
* সিটি কর্পোরেশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র নিয়ে আয়োজন করতে হবে।
গত ৩ জুন পাঞ্জাব কিংসকে ৬ রানে হারিয়ে প্রথমবার আইপিএল শিরোপা জেতে বেঙ্গালুরু। পরেরদিন বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে শিরোপা উদযাপন করে দলটি। উদযাপনের সময় স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলিত হয়ে ১১ জন মারা যান এবং আরও অনেকে আহত হন।
ঘটনার পর কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বেঙ্গালুরু পুলিশকে আরসিবি এবং ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং পদদলিত হওয়ার ঘটনাগুলোর তদন্তের নির্দেশ দেন। ৬ জুন পুলিশ আরসিবির বিপণন ও রাজস্ব বিভাগের প্রধান নিখিল সোসালে এবং ডিএনএর দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৩ জুন তাদের সকলকে জামিন দেয়া হয়।
কর্ণাটক রাজ্য ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ) দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সচিব এ শঙ্কর এবং কোষাধ্যক্ষ ইএস জয়রাম, পদদলিত হওয়ার ঘটনায় দায় ও ‘নৈতিক দায়িত্ব’ উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন।